বাকৃবিতে রুম দখল করলেন ছাত্রলীগ নেত্রী: সারারাত হলের বাইরে সাধারণ ছাত্রীরা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলের একটি কক্ষ দখলের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে মধ্যরাতে ওই কক্ষের আবাসিক ছাত্রীসহ প্রায় ২০ জন ছাত্রী হলের বাইরে অবস্থান নেয় এবং রাতভর আন্দোলন করে। মঙ্গলবার (১০ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। এসময় রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত হলের বাইরে গেটের সামনে বসে এ আন্দোলন চালিয়ে যায় তারা। পরবর্তীতে ওই হলের প্রভোস্ট এসে কক্ষটি তালাবদ্ধ করে দেয় এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি সমাধান করবে বলে আন্দোলনকারী ছাত্রীদের আশ্বাস দেয়। প্রভোস্টের আশ্বাসে পরে ছাত্রীরা আন্দোলন থামিয়ে নিজ নিজ কক্ষে চলে যায়।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম, বেগম রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সহ সহকারী প্রক্টররা এসে আন্দোলনরত ছাত্রীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

হলসূত্রে জানা যায়, দখলকৃত কক্ষটি বেগম রোকেয়া হলের মূল ভবনের ৩০৩ নং কক্ষ। এটি মূলত চারটি সিটের একটি কক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুরাইয়া আঁখি নামের এক ছাত্রী ওই কক্ষে থাকেন। বাকৃবি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বেগম রোকেয়া হল নিজের আয়ত্তে আনার চেষ্টা করতে থাকে নতুন কমিটিতে পদপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান রিজা এবং তানজিনা শিকদার প্রিয়া। এরপর থেকে দুইজনের সমর্থকদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। শুরু হয় হলে রুম দখলের মতো প্রক্রিয়া।

আঁখি বেশ কিছুদিন ধরে বাড়িতে অবস্থান করায় তার কক্ষের তালা ভেঙ্গে কক্ষটি দখল করে নেয় ছাত্রলীগ নেত্রী রিজা ও তার সমর্থকরা বলে অভিযোগ করেন তিনি।

অভিযোগকারী ছাত্রী সুরাইয়া আঁখি বলেন, আমি ছুটিতে বেশকিছুদিন বাড়িতে ছিলাম। হলে এসে দেখি আমার কক্ষটি ছাত্রলীগের নেত্রী রিজা ও তার সমর্থক দখল করে নিয়েছে এবং আমাকে ওই কক্ষে ঢুকতে দিচ্ছে না। গত রবিবার রাত থেকে আমি ওই কক্ষের বাইরে অবস্থান করছি। আমি হল প্রশাসনকে অবহিত করলে তারা বিষয়টি প্রথমে আমলে নেয়নি। এর কোনো সুরাহা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান অভিযোগকারী ওই ছাত্রী।

আন্দোলনের সময় ওই ছাত্রীর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন আরেক ছাত্রলীগ নেত্রী তানজিলা শিকদার প্রিয়া।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেত্রী ইসরাত জাহান রিজা বলেন, হল প্রশাসনের সম্মতিতে অনেকদিন তালা বদ্ধ থাকা ওই কক্ষে আমরা উঠেছি। চারটি সীটের মধ্যে তিনটি খালি ছিল যেগুলোতে আমরা উঠেছি। কাউকেই কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়নি বা কোনোরকম হয়রানি করা হয়নি। আমাদের বিরুদ্ধে করা সবগুলো অভিযোগ মিথ্যা। আমরা কক্ষে উঠার পর উল্টো আমাদের তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।

প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা কক্ষটি হল প্রশাসনের আয়ত্ত্বে নিয়েছি। কক্ষটি তালাবদ্ধ করে সিলগালা করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবো। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share this post

scroll to top