ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ধুমধাম করে স্কুলে পড়ুয়া এক ছাত্রীর বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৮ মে) আনুষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষার্থীর নিজ বাড়িতেই বিশাল আয়োজনের মাধ্যমে বরের হাতে তুলে দেয়া হয় কিশোরী ছাত্রীকে। এব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন আগে থেকে অবগত থাকলেও বাল্য বিয়ে বন্ধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেনি।
জানা যায়, উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের জাটিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ১০ম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে তানিয়া আক্তারকে মাহমুদা আক্তার সাজিয়ে একই উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের ভাষাগকুল নগর গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে শাহিন (২৫) এর সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। তানিয়া আক্তার জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার আসাদ। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন ওই শিক্ষার্থী তার ছাত্রী কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে পারেননি । যদিওবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. হাফিজা জেসমিন বিষয়টি দেখার জন্য জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেন।
অপরদিকে জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন স্থানীয় মেম্বার আসাদের উপর এই বাল্য বিয়ের দায় দিয়ে বলেন, বিয়েটা তো মেম্বারের ছত্রছায়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। জন্ম নিবন্ধন সনদ তো তারাই দেন।
তবে এ বিষয়ে মেম্বার আসাদ বলেন, বিয়ের দাওয়াত পেয়েও বাল্য বিয়ের কারণে তিনি সেখানে যাইনি।
বিকেল ৪টায় বিয়ে বাড়িতে সাংবাদিকগণ উপস্থিত হলে বর লুকিয়ে পড়েন, তাড়াহুড়ো করে কনেকে নিয়ে গাড়িতে উঠেপড়েন বরের লোকজন। এদিক সেদিক ছুটোছুটি শুরু করেন বরযাত্রীসহ বিয়েতে আসা লোকজন। মেয়েকে এভাবে নিয়ে যাচ্ছে দেখে চিৎকার শুরু করেন মেয়ের মা আছিয়া খাতুন। তিনি ক্রন্দনরত অবস্থায় চিৎকার করে বলতে থাকেন আমার মেয়েকে ওরা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে কেনো। পরিবেশ কিছুটা শান্ত হলে বিয়ের ডকুমেন্ট দেখতে চাইলে সাংবাদিকদের তারা কোন ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি।
এ বিষয়ে জাটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুল হক ঝন্টু বলেন, মেয়েটির বয়স বাড়িয়ে জন্ম নিবন্ধনের জন্যে আমার কাছে এসেছিলো, আমি নিবন্ধন দেইনি। শুনেছি মেয়েটি জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা জানান, মা দিবসের অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকায় বিষয়টি জানতে পারিনি। খবর পেলে হয়তো ব্যবস্থা নেয়া যেতো।