ইরানকে আগেই কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো ভেনেজুয়েলা৷ আরো এক শত্রু দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল আমেরিকা। এমনকী, ভারত, চীন-সহ বিশ্বের বেশকিছু দেশকে ট্রাম্প প্রশাসন সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে জানাল, ভেনেজুয়েলা থেকে তেল বা পেট্রোপণ্য ক্রয় করা যাবে না।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের হুমকি দিয়ে জানান, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ভেনেজুয়েলার থেকে কেউ তেল কেনাতে পারবে না। মঙ্গলবারই ভারত সফরে এসেছিলেন ভেনেজুয়েলার পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী এবং সে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা পিডিভিএসএ-র সভাপতি ম্যানুয়েল কিভেদো৷ সাংবাদিকদের তিনি জানান, আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে বেশ কিছুটা কম মূল্যে তারা ভারতকে অপরিশোধিত তেল বিক্রি করতে চান। কারণ ভারতের সঙ্গে ভেনেজুয়েলা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও ব্যবসায়িক লেনদেন মজবুত করতে ইচ্ছুক দেশটি। এ পথেই তারা তীব্র আর্থিক সংকটের শাপ কাটিয়ে উঠতে চান। এরপরই নয়াদিল্লির উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন৷
ভেনেজুয়েলার কমিউনিস্ট সরকারের প্রধান নিকোলাস মাদুরো দেশের বিপুল পেট্রোপণ্য চুরি করে নিজের আর্থিক সম্পত্তি বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, গোটা দেশকে তিনি ঠেলে দিয়েছেন অন্ধকার ও অনাহারের দিকে। এই কুকর্মে মাদুরোকে মদত জুগিয়েছে সে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। এরপরই ভেনেজুয়েলার উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা।
ওয়াশিংটনের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ তেল কিনলে সেই দেশকে চরম ফল ভুগতে হবে। উল্লেখ্য, ইরান, সৌদির পর ভেনেজুয়েলা হলো ভারতে তৃতীয় বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী দেশ। ভারত হল বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেলের ক্রেতা। ভারতীয় কূটনীতিকদের মতে, ইরানের কাছে তেল কেনার বিষয়ে ছাড় দিলেও, ভেনেজুয়েলার মার্কিন ছাড়পত্র মিলবে কিনা সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে৷
ভেনিজুয়েলা সঙ্কট সমাধানে মধ্যস্থতায় আগ্রহী জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস সোমবার ভেনিজুয়েলার সঙ্কট নিরসনে আবারো মধ্যস্থতার প্র্রস্তাব দিয়েছেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠককালে তিনি এ প্রস্তাব দেন। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
কারাকাসের অনুরোধে নিউইয়র্কে গুতেরেস ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ আরেয়াজার সাথে বৈঠকে বসেন।
এদিকে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ও বিরোধী দলীয় নেতা জুয়ান গুয়াইদোর মধ্যকার বিরোধপূর্ণ সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটেছে।
জাতিসঙ্ঘ দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থিত দেশটিতে আরো রক্তপাত ও সহিংসতা এড়াতে সমঝোতার ব্যাপারে আন্তরিক হতে উভয়পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসঙ্ঘ মুখপাত্র স্টিফেন ডুজ্যারিক বলেন, ‘ভেনিজুয়েলার জনগণের মঙ্গলের জন্য চলমান বিরোধ মিমাংসার ক্ষেত্রে একটি সমঝোতায় আসতে জাতিসংঘ মহাসচিব উভয়পক্ষের কাছেই তার প্রস্তাব রেখেছেন।’
গুয়েইদো গত মাসে নিজেকে ভেনিজুয়েলার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশ তাকে ভেনিজুয়েলার বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
এদিকে রাশিয়া ও চীনসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ মাদুরোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।