পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়া এক কিশোরীকে উদ্ধারের পর কয়েক দফা হাসপাতাল পরিবর্তন শেষে আবারও নেত্রকোনায় পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার( ২৮ এপ্রিল) ময়মনসিংহ থেকে কিশোরীকে পাঠিয়ে দিলে চিকিৎসার ভার নেয় নেত্রকোনা শিশু কল্যাণ বোর্ড। রাত থেকেই তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এদিকে এমন অমানবিক ঘটনায় দায়ীদের দ্রুত বের করে বিচারের আওতায় আনার দাবি সবার।
হাসপাতাল ও শিশুকল্যাণ বোর্ডের সদস্যরা জানান, গত ৪ এপ্রিল নেত্রকোনা শহরের পারলা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর মানসিক রোগী মনে করে কর্তৃপক্ষ পাঠিয়ে দেয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
সেখান থেকে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা করে মাথা ন্যাড়াসহ ছাড়পত্র দিয়ে আবারও বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে নেত্রকোনা সমাজসেবার শিশুকল্যাণ বোর্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বোর্ডটি জরুরি সভা ডেকে কিশোরীর সুস্থতার জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে আবারও ভর্তি করে। এদিকে কিশোরীর নিরাপত্তায় দুই পুলিশ কনস্টেবল দেওয়া হয়েছে যারা দেখভাল করছেন।
এদিকে সংকটাপন্ন কিশোরীকে সুচিকিৎসা এবং নিরাপত্তা দিয়ে অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি নারী নেত্রীসহ বিভিন্ন মহলের। তারা জানান যেহেতু কিশোরীটি বেঁচে আছে তাহলে আসামি বের করে বিচার করা যাবে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার এম এইচ মাহবুবুর রহমান জানান, পাগলামি করত বলে তাকে ময়মনসিংহে পাঠানো হয়েছিল। সামনে ঈদ থাকায় স্টাফ কম। পরবর্তীতে ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, জরুরি সভা করে ময়মনসিংহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে, কিশোরীকে চেতনানাশক খাইয়ে অথবা পাশবিক নির্যাতনের পর চেতনানাশক খাইয়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। শিশুটির বিষয়ে তারা যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মডেল থানাকে কিশোরীর মা এবং স্বজনদের শিশু কল্যাণ বোর্ডে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে হাসপাতালে পুলিশ কনস্টেবল রেখে আয়া দিয়ে সেবা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে নারী নেত্রী কহিনুর বেগম জানান, গত ২০০৬ সালে জেলার মোহনগঞ্জ থেকে এমন এক কিশোরীকে উদ্ধার করলেও প্রায় এক মাস চিকিৎসা দিয়ে বাঁচাতে না পারায় ওই কিশোরীর স্বজন এবং অভিযুক্তরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।