ছাত্রীর মায়ের সাথে পরকীয়া। তারপর বিয়ে করে প্রায় এক বছর সংসার করার পর এখন পুরো বিষয়টিই অস্বীকার করে চলেছেন এক মাদরাসার পরিচালক। ঘটনাটি ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায়। অভিযুক্ত প্রেমিক জেলার গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের কলেজ সড়কের ভাড়া ভবনে অবস্থিত দারুল হাবীব ইসলামী একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। তিনি তার মাদরাসার এক ছাত্রীর মায়ের সাথে পরকীয়া ও বিয়ে করে প্রায় এক বছর সংসার করার পর বিয়ের কথা অস্বীকার করছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, চাঁদপুর জেলার মতলব থানার ইসলামবাদ গ্রামের রাশেদা বেগম নামে এক গৃহবধূ স্বামীর ভরণপোষণ না পেয়ে গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর এলাকায় এসে দুই শিশু কন্যা নিয়ে জীবন সংগ্রাম শুরু করেন। এক পর্যায়ে স্থানীয় এক রাজমিস্ত্রীর অধীনে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ নেন তিনি।
এরপর প্রায় দুই বছর পূর্বে দুই কন্যা শিশুকে স্থানীয় দারুল হাবীব ইসলামী একাডেমিতে আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি করেন। দুই শিশুর খোঁজ খবর জানতে তাদের মা মাঝে মধ্যেই মাদরাসায় যাওয়া আসা করতো। এ সময় মাদরাসার পরিচালক হাফেজ মাহবুবুর রহমানের কুদৃষ্টি পড়ে এই নারীর উপর। হাফেজ মাহবুবুর রহমান ওই নারীকে ফুসলিয়ে তার সাথে প্রথমে পরকীয়া ও পরে আগের স্বামী সেলিম মিয়াকে ডিভোর্স করিয়ে দেন। এরপর ঢাকার ইসলামপুর এলাকায় গিয়ে ওই নারীকে বিয়ে করেন তিনি।
ভূক্তভোগী রাশেদা বেগম অভিযোগ করেন, হুজুর আমাকে বলেছেন বিয়ের কাবিননামা তোমাকে পরে দেবো। বিয়ের পর ভবেরচর ফিরে এসে প্রথমে আলীপুরা ও বর্তমানে আনারপুরা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছি। হাফেজ হুজুর সপ্তাহে প্রায় দুই থেকে তিনদিন আমার সাথে ভাড়া বাড়িতে সংসার যাপন করে। আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে নিজের বাড়িতে উঠাতে বললে হুজুর বলে, আমার আগের ঘরের বিবি সন্তান আছে, পরে এক সময় তোমাকে আমার বাড়িতে নেয়া হবে।
ভূক্তভোগী এই নারী আরো অভিযোগ করেন, মাস খানেক আগে হঠাৎ তিনি (মাহবুবুর রহমান) আমাকে মাদরাসায় খবর দিয়ে নিয়ে যান। এরপর তার কক্ষে আটকে রেখে জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর রেখে দেয়। এছাড়া আমার মোবাইল ফোন থেকে আমাদের দুজনের অন্তরঙ্গ ছবি ও ফোনে বিভিন্ন সময় বলা কথা বার্তার রেকর্ড ডিলিট করে দেয়।
তিনি আরো বলেন, আমাকে তিনি বিয়ে করেননি বলে হুমকি দিয়ে সেখান থেকে থেকে বের করে দেয়া হয়। এদিকে আমার সন্তানদের অন্য একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিয়েছে মাহবুবুর রহমান। আমি এখন কোথায় দাড়াবো?
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাফেজ মাহবুবুর রহমান তাঁর স্ত্রী রাশেদা বেগমকে (২৮) নিয়ে প্রায় এক বছর আগে আনারপুরা এলাকায় সামসুল হকের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। সামসুল হকের পরিবার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মাহবুবুর রহমান তারঁ স্ত্রী নিয়ে থাকার কথা বলে রুম ভাড়া নিয়েছেন এবং প্রায় এক বছর ধরে থাকছেন।
এদিকে গত বুধবার দারুল হাবীব একাডেমির পরিচালক হাফেজ মাহবুবুর রহমান দাবি করেন, তিনি রাশেদা বেগমকে বিয়ে করেননি। তবে একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন যে, রাশেদার সাথে তার একটি বিষয়ে ঝামেলা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করা হবে।