বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ছাত্রী লাঞ্ছনা ও ২৮ মার্চ ছাত্রলীগের গাড়ি ভাঙচুর ও সাংবাদিক মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে গত ২৯ মার্চ ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু তদন্ত কমিটি গঠিত হওয়ার পর ১০ কার্যদিবস পেরিয়ে গেলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ছাইফুল ইসলাম।
১০ কার্যদিবস হিসেবে তদন্ত প্রতিবেদন গত ১১ এপ্রিল রেজিস্ট্রার বরাবর জমা দেওয়ার কথা ছিল। তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন আমার কাছে জমা দেওয়ার কথা কিন্তু এখনো প্রতিবেদন হাতে পাইনি। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত সময়ের আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো আবেদন পাইনি আমি।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ার বিষয়ে তদন্ত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. আশরাফুল হক বলেন, তদন্তের সময় আমরা সাংবাদিক, ছাত্রলীগ এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে এ পর্যন্ত ৭ টি মিটিং করেছি। আমরা সত্য উদঘাটন করার চেষ্টা করছি। অনেকেই আবার আবেদন করেছে এবং অনেকজনের নাম তুলে ধরেছে। আমরা প্রত্যেকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি। সে কারণে বেশি সময় লাগছে । তবে কতদিনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো সেটি বলতে পারছি না। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আমাদের অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন, এ বিষয়ে আমি মৌখিকভাবে আবেদন করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত¡ ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল হককে সভাপতি ও সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন, সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল হক এবং প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. চয়ন গোস্বামী।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, আমি যতদূর জানি তাদের আরও কয়েকটি মিটিং প্রয়োজন। রোজার মধ্যে হওয়ায় হয়ত কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। আমি তদন্ত কমিটির আহবায়ককে দ্রæত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য জানিয়ে দিচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ গাড়ি ভাঙচুরের ভিডিও ধারণ করার সময় ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হন বাকৃবি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আবদুল্লাহ ওমর আসিফ। ঘটনায় জড়িত ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুল হক হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহীন সুমনসহ আরও কয়েকজন নেতাকর্মী। ওই ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবি করে ২৯ মার্চ প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক।