ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন একটি পৌরসভার মধ্যে ৮টি গ্রামে রয়েছে পালপাড়া।
করোনার কারনে দুই বছর হয়নি বৈশাখী মেলার আয়োজন। করোনা শুরুর বছরে তৈরি করা বৈশাখী পন্যগুলো তারা বিক্রি করেছেন পানির দামে। তারপর থেকে বৈশাখ নিয়ে কোন ভাবনা নেই পালপাড়াগুলোতে।
সরেজমিন, উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের বেড়ীবাড়ী পালপাড়ার সুশান্ত কুমার পাল জানান, উপজেলার বেড়ীবাড়ী, শিবগঞ্জ, মুহয়াতলা, ধামর, ভালুকজান, চকরাধাকানাই, নাওগাঁও, বেতবাড়ী গ্রামে রয়েছে পালপাড়া। দিনের দিনের পর দিন নানা সংকটে কমছে এ পেশার লোক। যারা বয়স্ক তারা এখন ধরে রেখেছেন এ পেশা। তিনি বলেন, প্রতিটি পালপাড়ায় পেশাদার পালের সংখ্যা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। দুই বছর ধরে করোনার কারনে বৈশাখী মেলা বন্ধ থাকায় লোকসানের আশংকায় পালপাড়াগুলোতে তৈরি হচ্ছে না এবার কোন বৈশাখী পন্য।
সুচন্দা রানী পাল জানান, করোনা শুরুর আগে বৈশাখী মেলাকে ঘিরে তারা যে পন্যগুলো তৈরি করে ছিল মেলা না হওয়ায় সে পন্যগুলো তারা ধান করে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছে। এবার লোকসানের ভয়ে কোন বৈশাখী পন্য তৈরি করছেন না তারা।
পুষ্প রানী পাল জানান, পর পর দুইবার করোনার কারনে পালেরা লোকসানের মুখে পড়ে ছিল কেউ তাদের খোজ নেয়নি। লোকসানের ভয়ে ্এবার তারা পহেলা বৈশাখের কোন পন্য তৈরি করছেন না।
৮০ বছরের উদয় পাল জানান, ১৯৬৬ সালে এসএসসি পাশ করে বাপদাদার পেশাটাকে আকড়ে ধরে আছি। এক সময় পহেলা বৈশাখ আসার এক মাস আগে থেকে পালপাড়ায় নাওয়া খাওয়া বন্ধ থাকতো। রাতদিন কাজ হতো বৈশাখকে ঘিরে। সেই বৈশাখ এখন পালপাড়া থেকেই হারিয়ে গেছে। বৈশাখে পালপাড়ার পুরুষ মহিলা আবালবৃদ্ধের হাতে একমাস রঙ লেগে থাকতো। এখন আর কারও হাতে রঙ লাগে না। এ জন্য তিনি সরকারের পৃষ্টপোষকতাকেই দায়ী করে ঘূর্নায়মান চাকের কাঁদায় হাত লাগান।