প্রাণনাশের হুমকির ঘটনা মাথায় নিয়েই অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন নেত্রকোনার তারুণ্যের প্রতীক সাহসী সংবাদকর্মী রিফাত আহমেদ রাসেল। দীর্ঘ ২৩ দিন যাবৎ নিরাপত্তাহীনতায় ছন্নছাড়া জীবনযাপন করলেও নেত্রকোনার গুটি কয়েক বিক্ষুব্ধ সাংবাদিক ছাড়া এগিয়ে আসেনি তেমন কেউ। এমনকি উপজেলা কিংবা জেলা প্রশাসনও। তবে ‘রাখে আল্লাহ মারে কে।’
এমন ন্যাক্কারজনক অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও প্রাণ নাশের বিষয়টি স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা আমলে না নিলেও জেলা পর্যায়ে কর্মরত বিক্ষুব্ধ কয়েকজন সাংবাদিক জেলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক এম মুখলেছুর রহমানের নেতৃত্বে সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এতে অবৈধপন্থায় অর্জিত অঢেল সম্পত্তি ও অর্থ থাকলেও কিছুটা নরেচরে বসেন আলাল। এদিকে প্রাণনাশের হুমকি অকথ্য ভাষাযয় গালাগালির বিষয়ে একটি অডিও রেকর্ড থাকায় দূর্গাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন রিফাত আহমেদ রাসেল।
দলের পদ পদবি না থাকলেও বালু ব্যবসায়ী বিডার আলাল আওয়ামীলীগ দলীয় মনোনীত মেয়র হওয়ায় সংবাদকর্মীকে প্রাণনাশের হুমকির খবর ছড়িয়ে পড়ায় দলীয় ভাবমূর্তি খুন্ন হচ্ছে দেখে স্থানীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা রিফাতকে ফোন করে খোঁজ খবর নেন। ঘটনার সত্যতা থাকায় রিফাতসহ তার পরিবারের সার্বিক সহযোগিতায় পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত বালু ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন আলালের অর্থের প্রলোভন ও দাম্ভিকতার কাছে নিশ্চুপ হয়ে পড়েন সকলেই।
এদিকে হুমকির ঘটনা আড়াল করতে নেত্রকোনার কয়েকজন সাংবাদিককে নিজ এলাকায় ডেকে নিয়ে রিফাত রাজাকার পরিবারের সন্তান আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন মেয়র আলাল। এমন ভিত্তিহীন হাস্যকর অভিযোগে হতবাক রিফাতের পরিবারসহ দুর্গাপুরের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ। যদিও দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া উপজেলার ৫২ জন রাজাকারদের তালিকায় ১২ নাম্বারে নাম রয়েছে মেয়র আলালের শ^শুর রমজান শেখের।
দীর্ঘদিন ছন্নছাড়া জীবন বাদ দিয়ে নিরাপত্তা হীনতার বিষয়টিকে মাথায় নিয়ে জেলা শহরের রিফাতের জন্য আন্দোলন করা কর্মরত বিক্ষুব্ধ কয়েকজন সাংবাদিকের সহায়তায় পরিবারের কাছে ফিরেছেন রিফাত।
এদিকে অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি সুরাহা করতে নানা রকম চেষ্টা চালিয়েও ব্যার্থ হয়েছেন স্থানীয় বারু ব্যবসায়ী সাংবাদিক ও জেলায় কর্মরত বেশ কজন সুবিধাভোগী সংবাদকর্মী। যদিও সত্যের কাছে মাথা নত করেনি তরুণ সাংবাদিক রিফাত।
এদিকে রিফাত ও তার পরিবারের নিরাপত্তায় সার্বিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, রিফাত ও তার পরিবারের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে।
উল্লেখ্য সোমেশ^রী নদী ও আশপাশের মানুষের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রেহাই পাওয়ার বিষয়ে ফেইসবুকে স্টেটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে গত ৯ মার্চ রাতে রিফাতকে নিজ অফিসে ডেকে নিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি সহ অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন পৌর মেয়র বালু ব্যবাসয়ী আলাল। এরপর দিন থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ছন্নছাড়া জীবন যাপন করছিলেন তিনি।