র্যাব ও সংস্থাটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিনা দোষে বাংলাদেশের এই বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
সোমবার র্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। র্যাব সদরদপ্তরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে বর্ণনা করেছে ‘অত্যন্ত গর্হিত কাজ’ হিসেবে।
তিনি বলেন, যে দেশ জাতির পিতার হত্যাকারীদের এবং যুদ্ধপরাধীদের নাগরিকের মর্যাদা দিয়ে আশ্রয় দেয়, সেই দেশ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর ‘বিনা অপরাধে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়’।
২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে র্যাবের বিভিন্ন সাফল্যের কথা প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মানুষকে উদ্ধার করতে পেরেছে বাংলাদেশ। জলদস্যু, বনদস্যু বা মাদক নিয়ন্ত্রণের মত বিভিন্ন ক্ষেত্রে র্যাব সফলতার পরিচয় দিয়েছে।
‘আমি জানি না আমাদের এই সাফল্যগুলোতে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) কোনো দুঃখ পেয়েছে কিনা, তা আমি বলতে পারি না। কিন্তু বাংলাদেশ যে এসব ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে, এটা হল সত্য। আর সেই ক্ষেত্রে এই ধরনের একটা স্যাংশন জারি করা, এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি। ‘
শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথা আমি স্পষ্ট বলতে চাই, সেটা হল আমাদের দেশে আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা বা র্যাব বা পুলিশ বা যে কেউ তারা নিজেরা যদি কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, আমরা কিন্তু তার শাস্তির ব্যবস্থা করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, যারা বিনা কারণে, বিনা দোষে র্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে স্যাংশন জারি করেছে, তাদের দেশে কিন্তু এ ধরনের অপরাধ করলে তারা তাদের কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো ওরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় না।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই নিষেধাজ্ঞার পেছনে ‘কিছু বাংলাদেশির’ হাত থাকারও ইংগিত করেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, সবচেযে দুঃখজনক হলো আমাদের দেশের কিছু মানুষ তারাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালায়। আর যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে বসে বসে, তারা কিন্তু অপরাধী। কোনো না কোনো দোষে হয়ত চাকরি হারিয়েছে বা দেশ ছেড়েছে।
জাতির পিতার খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত না দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নীতিরও সমালোচনা করেন বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সেখানে আমাদের যুদ্ধাপরাধীরা যেমন স্থান পেয়েছে, জাতির পিতার খুনি আত্মস্বীকৃত খুনি, সেও কিন্তু আমেরিকায় বসবাস করছে। তাকে তারা ওখানকার সিটিজেন করে নিয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, আমরা বার বার রিকোয়েস্ট করছি, অনুরাধ করছি, প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি দিচ্ছি, একের পর এক প্রেসিডেন্ট আসছে আমরা তার কাছে ধরনা দিয়ে যাচ্ছি। জাস্টিস ডিপার্টমেন্টে আমরা আবেদন করেছি এরা অপরাধী, এরা হত্যাকারী, নারী হত্যাকারী, খুনি, ১৫ অগাস্ট তারা খুন করেছে। কাজেই তাদেরকে আমাদের দেশে ফেরত দিতে হবে। তারা অপরাধীদের রক্ষা করে তাদের দেশে স্থান দেয়। আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশে স্যাংশন দেয়।”