স্বাধীনতা দিবসের র্যালিতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপের মধ্যে বাগবিতন্ডার ঘটনা ঘটেছে। বাগবিতন্ডা চলাকালীন ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের পদপ্রত্যাশী নেতা খন্দকার তায়েফুর রহমানের বিরুদ্ধে কয়েকজন ছাত্রী লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে।
লাঞ্ছনার প্রতিবাদে শনিবার সকাল ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনের রাস্তা অবরোধ এবং টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অভিযুক্ত নেতার বহিষ্কার ও বিচার দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চ (শনিবার) সকাল ৮ টার দিকে বাকৃবির বেগম রোকেয়া হল ছাত্রলীগ ইউনিটের ছাত্রীরা একটি র্যালি বের করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ মরণ সাগর বেদিতে ফুল দিতে যায়। ফুল দিয়ে হলে ফেরার সময় ছাত্রলীগের পদপ্রার্থী নেত্রী ইসরাত জাহান রিজা ও কয়েকজন মেয়ে অন্য ছাত্রলীগ গ্রুপের সঙ্গে ফুল দিতে যেতে চাইলে হলের সাধারণ সম্পাদক তানজিনা শিকদার তাদের বাঁধা দেন। একসময় তাদের মধ্যে বাগবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে তায়েফ রিয়াদ ও তার দলের নেতাকর্মীরা এসে ওই হলের কিছু ছাত্রী আলাদা করে নিয়ে চলে যায়।
এদিকে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে বিচার দাবি করে সাধারণ ছাত্রীদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রক্টর বরারর একটি অভিযোগপত্র জমা দেয় লাঞ্ছনার শিকার হওয়া ছাত্রীরা।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘটনাস্থলে তায়েফ রিয়াদের নেতৃত্বে শতাধিক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বাধা প্রদান করে। এক পর্যায়ে তায়েফ রিয়াদসহ কয়েকজন একাধিক ছাত্রীর গায়ে হাত দেয়। ওই ঘটনায় বাকৃবির শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা অপমানিত, লাঞ্ছিত ও সংক্ষুব্ধ। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার অতি দ্রæত বিচার করে তায়েফ রিয়াদসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় না আনলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।
এ বিষয়ে বেগম রোকেয়া হলের ছাত্রী ও শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রার্থী নেত্রী ইসরাত জাহান রিজা বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমিও উপস্থিত ছিলাম। কাউকে লাঞ্ছিত করা হয়নি। যেসব মেয়েরা আমার সাথে আসতে চেয়েছিল তাদের জোর করে তারা নিয়ে যেতে চেয়েছিল। এসময় আমি বাঁধা দিলে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়।’
অভিযোগ অস্বীকার করে তায়েফ রিয়াদ বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। এমন কিছুই করা হয়নি। বরং মেয়েরা হলের সিনিয়র নেত্রীবৃন্দদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। আমাকে হেয় করার জন্যে এমন করা হয়েছে।’
বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে বেলা আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারী ছাত্রীবৃন্দ ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অফিসে অভিযোগ নিয়ে আসলে তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের উভয় গ্রæপের সঙ্গে বসে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করার আশ্বাস দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীনকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।