ময়মনসিংহের ত্রিশালে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় এক শ্রেণির অধিক মুনাফালোভী ব্যবসায়ী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকা, লোকালয় ও ফসলি জমিতে অবৈধ ভাবে গড়ে তুলছে ইট ভাটা। এসব ইট ভাটায় নেই কোন সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। ইট ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, গ্যাস ও ধুলায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে। হারিয়ে যাচ্ছে জীব-বৈচিত্র্য, বিনষ্ট হচ্ছে আমাদের চির চেনা প্রকৃতি ও পরিবেশ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের দেওয়ানীয়া বাড়ি মর্ডাণ ব্রিক্স সংলগ্ন ১৭নং দেওয়ানীয়া বাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ভাই ভাই ব্রিক্স এর সাথেই ১২২নং কানহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উভয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, এই ইটভাটাগুলো স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এ নিয়ে সামাজিক ভাবে ইটভাটা বন্ধে বার বার চেষ্টা করেও কোন প্রতিকার না হওয়ায় উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানিয়েছি। অনেক সময় স্কুল চলাকালীন আমরা দরজা জালানা বন্ধ করে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতে হয়। এবিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা বই পুস্তক পড়ে জানি ইটভাটা পরিবেশ দূষণ করে কিন্তু বাস্তবে যে এতটা দুষণ করে তা আমরা প্রতিদিন স্কুলে পড়তে আসলে টের পাই। অনেক সময় ইটভাটার কালো ধোয়া ও দোলা-বালু স্কুল অন্ধকার হয়ে যায় আমাদের দম নিতে কষ্ট হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বসত বাড়ির পাশে ইট ভাটার বিষাক্ত কালো ধুয়ায় আমরা মারাত্মক ভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছি। গাছের ফল-ফলাদিও কমে গেছে। সরকারি নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে লোকালয়, শিক্ষা প্রতিষ্টানের সংলগ্ন, ফসলি জমিতে এসব ইপভাটা মালিকরা তাদের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এসব ইটভাটায় ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি এনে ইট তৈরি করছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমির উর্বরতা শক্তি। হ্রাস পাচ্ছে জমির উৎপাদন ক্ষমতা।
ভাই ভাই ব্রিক্স এর মালিককে ইটভাটায় গিয়ে খোঁজে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে মর্ডাণ ব্রিক্স এর মালিক খোকনের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোশাররফ হোসেন (ভারপ্রাপ্ত) এই বিষয়ে এই প্রতিনিধিকে মুঠোফোনে বলেন, উক্ত দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি কোনপ্রকার অভিযোগ দেয়নাই, অভিযোগ পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
এই ব্যাপারে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আক্তারুজ্জামান মুঠোফোনে প্রতিনিধিকে বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত নই, যদি কেউ আমার কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।
পরিবেশ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক মোঃ ফরিদ আহমেদ প্রতিনিধিকে মুঠোফোনে বলেন, ত্রিশালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে এই দুটি ইটভাটার ব্যাপারে আমার জানা নেই, আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে, অচিরেই অভিযান পরিচালনা করার জন্য আমরা ত্রিশালে একটি টিম পাঠাবো।