‘আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান।’ প্রেমে মন মজলে এ গান গাইতে ভালোবাসেন আপনিও। কিন্তু কখনো সেই বিষ পান করে মৃত্যু মুখে পড়েছেন? মন দেয়ার পর বিষধর সাপের ছোবল খেতে হয়েছে কখনো? তাহলে হৃদয় ভাঙার ব্যথা আপনার চেয়ে ভালো আর কে-ই বা বুঝবে।
আর ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে সে যন্ত্রণা যেন নতুন করে খোঁচা দেয়। চারদিকে হাতে-হাত, ঠোঁটে-ঠোঁট দেখলে বুকের মধ্যে মোচড় দেয়াটাই তো স্বাভাবিক। আর তখনই সেই মানুষটিকে শাপ-শাপান্ত করতে ইচ্ছে হয় আরো বেশি করে, যে কখনো স্বপ্ন দেখিয়েছিল ভালোবাসার। আচ্ছা, বিষাক্ত কোনো সাপের নাম যদি সেই ‘বিশ্বাসঘাতক’-এর নামে রাখা যেত, তবে কেমন হতো? তাকে দেখিয়েই বলা যেত, ‘ওই যে সেই সাপ, যার ছোবল হইতে সাবধান!’ ভালোবাসা অপূর্ণ রয়ে গেলেও আপনার এমন ইচ্ছা পূরণ হতেই পারে। কারণ এমনই অভিনব এক সুযোগ করে দিচ্ছে একটি চিড়িয়াখানা।
ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষে নতুন ধরনের একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনির একটি চিড়িয়াখানা। প্রেমের দিনে আপনার মুখে হাসি ফোটাতেই এই উদ্যোগ। প্রতিযোগিতায় জিততে পারলে চিড়িয়াখানার একটি বিষধর সাপের নাম রাখতে পারবেন সাবেক নামে। নিজেদের ফেসবুক পেজে প্রতিযোগিতার বিবরণ পোস্ট করেছিল ওই চিড়িয়াখানা। সেখানেই জানানো হয়, বিশ্বের অন্যতম বিষাক্ত সাপ ‘ব্রাউন স্নেক’ -এর নামে সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার নামকরণ করতে পারবেন বিজয়ী।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে কী করতে হবে? প্রথমেই একটি ফর্ম ভরতে হবে, যেখানে লিখতে হবে নিজের সাবেকের নাম। সেই সঙ্গে ব্যাখ্যা করতে হবে কেন তিনি বিষধর। সঙ্গে চিড়িয়াখানার জন্য এক ডলার অর্থ সাহায্যের আবেদনও করা থাকবে ফর্মে। আপনার ব্যাখ্যা যদি আয়োজকদের পছন্দ হয়, তাহলেই কেল্লাফতে। প্রেমদিবসে ব্রাউন স্নেক-কে ডাকা হবে বিজয়ীর সাবেকের নাম ধরেই। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই প্রতিযোগিতা। অনেকেই অংশ নিয়েছেন সেখানে। অর্থাৎ ছোবল খাওয়া প্রেমিক-প্রেমিকার সংখ্যাও যে নেহাত কম নয়, তা বলাই বাহুল্য। তবে অনেকে এই আয়োজনের নিন্দাও করেছেন।
সাপ দেখিয়ে পুলিশের স্বীকারোক্তি আদায়!
সাপ দেখলে কে না ভয় পায়! সন্দেহভাজন এক চোরকে আটকের পর তাকে ভয় দেখিয়ে কথা বের করার জন্যে তার গায়ে সাপ জড়িয়ে দেবার ঘটনা জানাজানি হবার পর এ নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় এ ঘটনার জন্যে পুলিশ দুঃখ প্রকাশ করেছে।
হয়তো এই ঘটনাটি জানাজানিই হতো না। কিন্তু পুলিশের হাতে আটক ব্যক্তির গায়ে সাপ পেঁচিয়ে দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়।
মানবাধিকার কর্মীরাও এর তীব্র সমালোচনা করেছেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, পাপুয়া অঞ্চলে পুলিশের একজন কর্মকর্তা ধৃত এক ব্যক্তির গায়ে একটি সাপ জড়িযে দিচ্ছেন, আর হাতকড়া পরা লোকটি ভয়ে চিৎকার করছে।
পুলিশ সন্দেহ করেছিল যে ওই লোকটি একটি মোবাইল ফোন চুরি করেছে।
স্থানীয় পুলিশ বাহিনীর প্রধান জিজ্ঞাসাবাদের সময় সাপ ব্যবহারের কৌশলের পক্ষে বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, সাপটি ছিল পোষা এবং নির্বিষ। তবে এই ঘটনাকে তিনি অপেশাদার বলে মন্তব্য করেছেন।
“ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমরা কড়া ব্যবস্থা নিয়েছি,” এক বিবৃতিতে একথা বলেছেন টন্নি আনন্দা সদায়া।
তবে তিনি দাবি করেছেন, পুলিশ ওই ব্যক্তিটিকে মারধর করেনি। স্বীকারোক্তি আদায়ের লক্ষ্যে তারা শুধু তাদের নিজেদের উদ্ভাবিত এক কৌশল কাজে লাগিয়েছেন।
এই ভিডিওটি টুইট করেছেন মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী ভেরোনিকা কোমন। তিনি দাবি করেছেন যে সম্প্রতি পুলিশ নাকি পাপুয়ার স্বাধীনতাপন্থী এক আন্দোলনকারীকে আটক করার পর তাকে সাপসহ একটি সেলের ভেতরে রেখেছিলেন।
ভিডিওতে একটি কণ্ঠ সন্দেহভাজন ওই চোরকে নানা ভাবে ভয় দেখাতে শোনা যায়। কখনও বলা হচ্ছিল যে তার মুখে বা প্যান্টের ভেতরে সাপ ঢুকিয়ে দেওয়া হবে ।
পাপুয়াতে যেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ইন্দোনেশিয়া থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার জন্যে আন্দোলন করছে, তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবর প্রায়ই শোনা যায়।
পাপুয়া নিউ গিনির সাথে সীমান্তের এই এলাকাটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ এবং ১৯৬৯ সালে এটি ইন্দোনেশিয়ার অংশ হয়ে যায়।
সূত্র : বিবিসি