গবেষণা ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদকের জন্যে মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) এমিরেটাস অধ্যাপক এবং বাকৃবির সাবেক উপাচার্য ড. এম. এ. সাত্তার মন্ডল। আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ২৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক এ বছর (২০২২) একুশে পদক পাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (অনুষ্ঠান) বাবুল মিয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের নাম ঘোষণা করা হয়। এ বছর ভাষা আন্দোলনে দুইজন, মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে চারজন, শিল্পকলায় সাতজন, ভাষা ও সাহিত্যে দুইজন, সাংবাদিকতায়, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একজন, গবেষণায় চারজন, সমাজসেবা এবং ভাষা ও সাহিত্যে দুইজনকে একুশে পদক প্রদান করা হবে। এ ২৪ জন বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্যে একুশে পদক পাবেন অধ্যাপক ড. এম. এ. সাত্তার মন্ডল।
অধ্যাপক সাত্তার মন্ডল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন (১৯৭২-১৯৭৪)। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি অর্থনীতিতে ১৯৭৯ সলে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি লাভ করেন এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরাল স্টাডি সম্পন্ন করেন (১৯৮৭-৮৮)। পরে বাকৃবিতে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক, বিভাগীয় প্রধান এবং ডীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাকৃবির ২১তম উপাচার্য ছিলেন তিনি। বর্তমানে সিন্ডিকেট সদস্য ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বাকৃবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নের ওপর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে ড. সাত্তার মন্ডলের কয়েক শতাধিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ, বই ও সেমিনার পেপার এবং জনপ্রিয় নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ জার্নাল অব এগ্রিকালচারাল ইকোনোমিক্স এর সম্পাদক ছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইরিগেশন অ্যান্ড ড্রেনেজ-সিস্টেমের সদস্য ছিলেন তিনি সুদীর্ঘ সময়। তিনি দেশী-বিদেশী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবেষণা প্রকল্পের প্রধান হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার ও পলিসি ফোরামে অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেয়া হচ্ছে।