জীবন্ত আগ্নেয়গিরির নিচেই তাদের বসবাস

আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিমে আটলান্টিকের বুকে একটি দ্বীপপুঞ্জের নাম কেপ ভার্দে। অসংখ্য সক্রিয় আগ্নেয়গিরিতে ঘেরা এই দেশের দ্বীপগুলো, আর তা থেকে অগ্ন্যুৎপাতও হয় থাকে নিয়মিত। সম্প্রতি কেপ ভার্দেতে একটি আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা নিঃসরণের পর তা নিচের গ্রামগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। লাভার স্রোত ঢুকে পড়েছে ঘরে পর্যন্ত, কিন্তু তারপরও তারা সেই বাড়িঘর ছেড়ে যেতে চাইছেন না।

কারণ সেখানকার অধিবাসীরা অনেক ক্ষয়ক্ষতি দেখেছেন, কিন্তু কাউকে মারা যেতে দেখেননি। তাই তারা এ গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করছেন না।

কেপ ভার্দের এমনই একজন বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ড্রয়িং রুমের জানালা দিয়ে ঢুকে পড়ছে জমাট লাভাস্রােত। লাভার চাপে দেয়ালে পর্যন্ত ফাটল ধরে গেছে। সেখানে আগত পর্যটকদের প্রশ্নের মুখে ওই বাড়ির মালিক বলেন, আমরা ভাবতে পারিনি অগ্ন্যুৎপাতটি এত ভয়ঙ্কর হবে। তবুও আমাদের সৌভাগ্য। কারণ আমি ও আমার ছেলে বাড়ির সব দামী জিনিসপত্রের প্রায় সবই বের করে নিতে পেরেছিলাম।

কেপ ভার্দের ফোগো আইল্যান্ডে ‘পিকো দো ফোগো’ আসলে একটি খুবই সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, আর এই সাঙ্ঘাতিক কান্ডটি সেই ঘটিয়েছে। সেটির অগ্ন্যুৎপাতে আচমকা ভেসে গেছে নিচের দুটি গ্রাম – কিন্তু তার পরও রামিরো ও তার বন্ধুরা কিছুতেই সেই গ্রাম থেকে সরতে রাজি নন। তাদেরকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, মাথার ওপর এত বিশাল একটা আগ্নেয়গিরি থেকে যে কোনো সময় উদ্গীরণের ভয় – সেই আতঙ্ক মাথায় নিয়ে এই গ্রামে কীভাবে থাকতে পারেন?

রামিরো নির্বিকারভাবে জবাব দেন, আমি আসলে জীবনে দু-দুবার সাঙ্ঘাতিক অগ্ন্যুৎপাত দেখেছি – দেখেছি কীভাবে গরম ফুটন্ত লাভার স্রােত সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু বিশ্বাস করুন কখনও দেখিনি সেই অগ্ন্যুৎপাতে কাউকে মারা যেতে – আর সেটাই আমাকে এখনও এই গ্রামে থেকে যাওয়ার ভরসা জুগিয়েছে, আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top