একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে ৪৯টি মনোনয়নপত্র যাচাইবাছাই শেষে সবগুলোকে বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আসন অনুযায়ী সবগুলো মনোনয়ন বৈধ হওয়ায় সব প্রার্থীকে বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করা হবে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম।
মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সংরক্ষিত নারী আসনের সব মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ ঘোষণা করার সময় এ কথা বলেন এই রিটার্নিং কর্মকর্তা।
আবুল কাসেম বলেন, ‘সংরক্ষিত নারী আসনে আমরা ৪৯টি মনোনয়নপত্র যাচাইবাছাই করেছি। বাছাইয়ে কোনো মনোনয়নপত্র বাতিল হয়নি। এ কারণে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৬ ফেব্রুয়ারি, ওই দিন কেউ যদি তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করে, তাহলে ১৭ তারিখেই আমরা চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করব।’
তিনি বলেন, ‘সংরক্ষিত আসনে যতগুলো আসন ছিল, আমাদের প্রার্থী সংখ্যাও ততজন। সে কারণে তাদেরকে আমরা বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করব। এরপর তা নির্বাচন কমিশনে পেশ করব। নির্বাচন কমিশন তা গেজেট আকারে প্রকাশ করবে।’
জাতীয় সংসদে ৩০০ আসনের বিপরীতে ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। ৪৯টি আসনের বিপরীতে একটি করে মনোনয়নপত্র জমা পড়লেও আরও একটি আসন ফাঁকা রয়েছে। সেই আসনটি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সাতজন প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় দলটির জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। সংরক্ষিত আসনে বিএনপি একজন প্রার্থী দিতে পারবেন।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনের গেজেট প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে বিএনপির প্রার্থীরা যদি শপথগ্রহণ না করেন, তাহলে এই সাতটা আসন নির্বাচন কমিশন শূন্য ঘোষণা করবে। পরবর্তীতে এই আসনগুলোতে নির্বাচন হবে। তাতে যারা এই আসনগুলো পাবে, সেই ভিত্তিতে একটি নারী আসনের ভোট হবে।’
সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাইবাছাইয়ের সময় স্বাক্ষর না দেয়াসহ ‘ছোটখাট’ ভুল-ত্রুটি আমলে নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
বৈধ হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত ৪৩ জন, জাতীয় পার্টির চারজন, ওয়ার্কার্স পার্টির একজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী একজন রয়েছেন।
বৈধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা হলেন ঢাকার শিরীন আহমেদ, জিন্নাতুল বাকিয়া, শবনম জাহান শিলা, সূবর্ণা মোস্তফা ও নাহিদ ইজহার খান।
চট্টগ্রামের খাদিজাতুল আনোয়ার ও ওয়াশিকা আয়েশা খানম, কক্সবাজারের কানিজ ফাতেমা আহমেদ, খাগড়াছড়ির বাসন্তি চাকমা, কুমিল্লার আঞ্জুম সুলতানা ও এ্যারোমা দত্ত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম।
গাজীপুরের শামসুন্নাহার ভূঁইয়া ও রুমানা আলী, বরগুনার সুলতানা নাদিরা, জামালপুরের মিসেস হোসনে আরা।
নেত্রকোণার হাবিবা রহমান খান ও জাকিয়া পারভীন খানম, পিরোজপুরের শেখ এ্যানী রহমান, টাঙ্গাইলের অপরাজিতা হক ও খন্দকার মমতা হেনা লাভলী, সুনামগঞ্জের শামীমা আক্তার খানম, মুন্সিগঞ্জের ফজিলাতুন্নেছা, নীলফামারীর রাবেয়া আলী।
নরসিংদীর তামান্না নুসরাত বুবলী, গোপালগঞ্জের নার্গিস রহমান, ময়মনসিংহের মনিরা সুলতানা, ঝিনাইদহের খালেদা খানম, বরিশালের সৈয়দা রুবিনা মিরা, পটুয়াখালীর কানিজ সুলতানা, খুলনার অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, দিনাজপুরের জাকিয়া তাবাসসুম, নোয়াখালীর ফরিদা খানম সাকী, ফরিদপুরের রুশেমা বেগম, কুষ্টিয়ার সৈয়দা রাশেদা বেগম, মৌলভীবাজারের সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, রাজশাহীর আদিবা আনজুম মিতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফেরদৌসী ইসলাম জেসী, শরিয়তপুরের পারভীন হক শিকদার, রাজবাড়ীর খোদেজা নাসরীন আক্তার হোসেন, মাদারীপুরের তাহমীনা বেগম, পাবনার নাদিয়া ইয়াসমিন জলি ও নাটোরের রত্না আহমেদ।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টি মনোনীত অধ্যাপিকা মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী, এডভোকেট সালমা ইসলাম, অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান ও নাজমা আকতার, ওয়ার্কার্স পাটির মনোনীত প্রার্থী লুৎফুন নেসা খান ও স্বতন্ত্র সেলিনা ইসলামের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।
একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের এর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল ১১ ফেব্রুয়ারি। ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৬ ফেব্রুয়ারি।