নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছেন বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
ভারতে বসকাসকারী তসলিমা নাসরিনের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মঙ্গলবার বিকেলে প্রবেশ করে দেখা যায় সেটি ‘রিমেম্বারিং’ করে দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। সাধারণত কারো মৃত্যু হলে এভাবে অ্যাকাউন্ট রিমেম্বারিং করে দেয় ফেসবুক।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তসলিমা নাসরিনের প্রোফাইলে লেখে, ‘আমরা আশা করি যারা তসলিমা নাসরিনকে ভালোবাসেন, তারা তাকে স্মরণ ও সম্মানিত করার জন্য তার প্রোফাইল পরিদর্শন করে সান্ত্বনা খুঁজে পাবেন।’
মঙ্গলবার রাতে তসলিমা নাসরিনের অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে আর ‘রিমেম্বারিং’ বার্তা দেখা যায়নি। সেখানে তিনি ‘পুনরুত্থান’ লিখে নতুন স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে অ্যাকাউন্ট ফিরে পেয়ে সেখানে তিনি লিখেছেন ‘পুনরুত্থান’। তার পরই শুরু করলেন একটি ধর্মকে কটাক্ক করে ফেসবুক পোস্ট লেখা। সেখানে তিনি লিখেন-
জি-হা-দিদের প্ররোচনায় ফেসবুক আমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল প্রায় একুশ ঘণ্টা আগে। এই একুশ ঘন্টায় আমি পরকালটা দেখে এসেছি। ‘উনি’ তো আমাকে হাত ধরে নিয়ে গেলেন, আমার জন্য বিশাল খানাপিনার আয়োজন করেছিলেন। খেয়ে দেয়ে বিশ্রামও নিলাম কিছুক্ষণ। হুরগুলো ঘুরঘুর করছিল পায়ের কাছে। দুটো ফুটফুটে গেলবান আমাকে রূপোর গ্লাসে দ্রাক্ষারস পান করতে দিল। পান শেষ হওয়ার পর উনি এসে বললেন ‘যাও সাগরগুলোয় সাঁতরে এসো। একটি দুধের, একটি মদের, আরেকটি মধুর সাগর’। আমি মধুর সাগরে সাঁতরে উঠে এলাম। উনি বললেন, ‘একটু দুধ আর মদের সাগরেও সাঁতরাও।’ আমি বললাম, ‘ না না আমি দুধ মদ কোনওটাই তেমন পছন্দ করি না, আপনি যদি বেদানার রসের কোনও সাগর বানাতেন, তাহলে অনেকক্ষণ সাঁতরানো যেত’। উনি বললেন, ‘দাঁড়াও, কাল থেকেই লোক লাগিয়ে দেব সাগর খোদার জন্য, বেদানার রসের একটা সাগর আমি বানাবোই’। এরপর উনি আমাকে বেহেস্ত আর দোযখগুলো ঘুরিয়ে দেখালেন । আমার জন্য বেহেস্তের মনোরম যে জায়গাটি বরাদ্দ রেখেছেন, সেটিও দেখালেন। আমি বললাম, ‘কেন, আমি তো আপনাকে নিয়ে কত হাবিজাবি বলি, আমাকে দোযখে দিন’। উনি বললেন, ‘না, আমি আমার সিদ্ধান্ত বদলেছি, যারা বুদ্ধিমান, আমার ভুল ধরিয়ে দেয়, বেহেস্তের লোভ করে না, তাদের আমি বেহেস্তে পাঠাবো, আর যারা দিন রাত খারাপ কাজ করছে, পাপ করে পাপমোচনের জন্য হজ করে আসছে, বেহেস্তের লোভে আমার গুণগান গাইছে, তাদের সবকটাকে ধরে ধরে দোযখে নিক্ষেপ করবো।’
আমি বললাম, ‘না, আপনাকে এত নিষ্ঠুর হওয়া মানায় না। ওদের মধ্যে কেউ কেউ যদি নিজের ভুল বুঝতে পেরে একটু মানুষ হয়, তাহলে ক্ষমাঘেন্না করে বেহেস্তে একটু স্থান ওদের তো দিতে পারেন।’
উনি বললেন, ‘ তুমি যখন বলছো, ভেবে দেখবো।’
এরপর উনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমাকে কি হাগ করতে পারি?’
বললাম ‘নিশ্চয়ই’।
উনি আমাকে আলিঙ্গন করলেন, কপালে দুটো চুমু খেলেন।
আমার ডানাওয়ালা ঘোড়াটা দাঁড়ানো ছিল কাছেই। তার পিঠে চড়ে বললাম, ‘এ আমার টেম্পোরারি ভিজিট ছিল। এরপর পার্মানেন্ট যখন আসবো, তখন অনেক গল্প হবে, কেমন?’
উনির চোখ ভিজে উঠলো। একটি ফ্লাইং কিস ছুড়ে দিলেন।