ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে পৃথক দু’টি ইউনিয়নে সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছে। উভয়পক্ষে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি শেষ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা। মোটরসাইকেল শোডাউন, গণসংযোগ, উঠোন বৈঠক ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজেদের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন তারা। এতে প্রায় সময়ই মুখোমুখি হতে গিয়ে প্রার্থীর সর্মথকদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে। যার ফলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটছে।
মঙ্গলবার রাতে উচাখিলা ইউনিয়নে নৌকা এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪০ জন এবং সোমবার সরিষা ইউনিয়নে আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আর এসব সংঘর্ষ নিয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করছে।
উচাখিলা ইউনিয়নে আ’লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুল ইসলাম জানান, নৌকার মিছিল নিয়ে তার বেশ কিছু নেতাকর্মী মোটরসাইকেল দিয়ে শোডাউন নিয়ে মরিচারচর এলাকায় নৌকার মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ প্রার্থী নজরুল ইসলামের বাড়ির সামনে যাওয়া মাত্রই তাদের বাধা দেয়া হয়। এতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে নজরুল ইসলামের সন্ত্রাসীরা নৌকার মিছিলের উপর আক্রমণ করে উচাখিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুরুল হক, রনি, রাজিব, বখতিয়ার, রাকিব, মগবুল, মাহফুল, হাবিল, আব্দুল্লাহসহ ৪০ জন নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে।
এ ইউনিয়নে আ’লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী মো: নজরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মরিচারচর এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করছিলেন। এসময় নৌকা সমর্থিত কিছু কর্মী মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন দিতে দিতে তার সভাস্থলে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িঘরে হামলা চালায়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে রাজিব, সাদেক, হামিদুলসহ তার বেশ কয়েকজন সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছে।
অপরদিকে সোমবার সরিষা ইউনিয়নের বাদাটি বাজারে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন এক যুবক। তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া জানান, ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে বর্ধিত সভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা এমদাদুল হক ভূঁইয়াকে ছুরিকাঘাত করে এবং দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিদ্রোহী প্রার্থী একরাম হোসেন ভূঁইয়া জানান, বর্ধিত সভায় উস্কানিমূলক বক্তব্যের পর নৌকা সমর্থিত লোকজন বাদাটি বাজারে এসে মাসুদের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এসময় এলাকার লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল কাদের মিয়া জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে তবে পৃথক দুটি ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেনি।