ধর্ষণ : সেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা রিমান্ডে

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ডাকবাংলোতে আটকে রেখে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার সাটুরিয়া থানার এসআই সেকেন্দার হোসেন ও এএসআই মাজহারুল ইসলামের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাদের মানিকগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ারের আদালতে হাজির করে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। এ সময় বিচারক তাদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে সোমবার রাতে নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী সাটুরিয়া থানায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। এরপর দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। রাতেই ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

এ দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ডাকবাংলোতে আটকিয়ে রেখে তরুণীকে ধষর্ণ ও জোর করে ইয়াবা সেবনে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন পুলিশের তদন্ত কমিটি।

রোববার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী। সে অভিযোগের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান ও ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হামিদুর রহমান সিদ্দীকী সোমবার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেন।

মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান জানান, সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয় নিয়ে সোমবার তদন্ত করা হয়। তদন্ত কমিটির কাছে নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী তার উপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন। দিনভর প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে ওই তরুণীর পুলিশ সুপারের কাছে যে অভিযোগ করেছেন তার সত্যতা রয়েছে। এব্যাপারে ওই তরুণী সাটুরিয়া থানায় উপপুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্ত করবেন সাটুরিয়া থানার (ওসি তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ। ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণের জন্য ওই তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষাসহ প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্ট করা হবে। অপরাধীকে পুলিশ সদস্য হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

উল্লেখ্য, উপ-পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন আশুলিয়া থানায় কর্মরত থাকার সময় এক নারীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ধার নিয়ে জমি কিনেন। কথা ছিল জমি বিক্রির লাভ তাকে দেয়া হবে। সেই হিসাবে তিনি সেকেন্দার হোসেনের কাছে প্রায় তিন লাখ টাকা পাবেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে ঘুরাতে থাকেন। সাটুরিয়া থানায় বদলি হয়ে আসার পরও সেকেন্দারের সাথে যোগাযোগ করা হয়।

বুধবার বিকেলে প্রতিবেশী ভাগ্নিকে নিয়ে সাটুরিয়া থানায় আসেন ওই নারী। এর পর সেকেন্দারের সাথে যোগাযোগ করা হলে সে টাকা দিবে বলে তাদের সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে নিয়ে যান। সন্ধ্যার পর সাটুরিয়া থানার এএসআই মাজহারুল ইসলামকে ডাকবাংলোতে নিয়ে যায় সেকেন্দার হোসেন। সেখানে ডাকবাংলোর একটি কক্ষে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ইয়াবা সেবন করে ও তার সাথে আসা ওই তরুণীকে জোড় করে ইয়াবা সেবন করায়। দুই পুলিশ কর্মকর্তা ওই তরুণীকে দুই দিন আটকিয়ে রেখে ধর্ষণ করে।

নির্যাতনের শিকার মামলার বাদি ওই তরুণী জানান, মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে রোববার লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর সোমবার বিকেলে পুলিশের তদন্ত কমিটি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তদন্ত কমিটির কাছে তিনি কিভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তার বর্ণনা দেন। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বাদি হয়েছে তার উপর ধর্ষণের অভিযোগে সাটুরিয়া থানায় উপ-পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেছেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top