বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সভাপতি এবং সাবেক সচিব এ এস এম আলী কবীর ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)
সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু আলী কবীরের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
মন্টু জানান, আলী কবীর বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। এর মধ্যেই হার্ট অ্যাটাক করেন। তিনি প্রায় এক মাস ধরে হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তার জানাজা ও দাফনের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ এস এম আলী কবীর কর্মজীবনের শুরুতে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে চাকরি করেন। কিছু দিন বাংলাদেশ ব্যাংকেও চাকরি করেন। ২০১১ সালে সরকারের সচিব হিসেবে অবসর যান তিনি।
নিজ জেলা দক্ষিণাঞ্চলীয় বরিশাল হলেও এ এস এম আলী কবীরের জন্ম ময়মনসিংহ জেলার উত্তর সীমান্তে গারো পাহাড়ের পাদদেশে হালুয়াঘাটে। সেখানে তার বাবার কর্মস্থল ছিল।
স্কুলজীবনের সূত্রপাত মুক্তাগাছা রাম কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়। স্কুলজীবনের সিংহভাগ কেটেছে ময়মনসিংহ জিলা স্কুলে। ১৯৬৭ সালে এসএসসি পাস করার পর ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। এইচএসসি পাস করেন ১৯৬৯ সালে, ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের পর পর। ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
ক্রীড়াঙ্গনের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব ছিলেন আলী কবীর। তিনি সচিব থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখেন৷ অবসর নেওয়ার পর সরকার থেকে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সভাপতি মনোনীত হন৷ এক দশকের বেশি সময় তিনি দেশের অন্যতম শীর্ষ ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অবদানের জন্য সর্বোচ্চ পদক জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার লাভ করেন ২০১৬ সালে। গত বছর জানুয়ারি মাসে তিনি বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।
স্কুলজীবন থেকেই লেখালেখি শুরু করেন আলী কবীর। প্রধানত কবি হলেও ছোট গল্প, প্রবন্ধ রচনা ও অনুবাদ সাহিত্যে তার লেখালেখি রয়েছে। তার বেশ কয়েকটি বই রয়েছে বাজারে। ঢাকা টাইমস, এই সময়সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তিনি কলাম লিখতেন।
এ এস এম আলী কবীর কিছু দিন ঢাকা টাইমসের সহযোগী প্রকাশনা সাপ্তাহিক এই সময়ের উপদেষ্টা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন ঢাকা টাইমসের সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন। তিনি মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।