বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দিনের ভোট রাতে নিয়ে ক্ষমতায় আসা সরকারের জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা নেই।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ১৫ মিনিটের সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসা করাতে বিদেশ যেতে চেয়েছিলেন। সেখানেও সরকারের বাধা। কোটি মানুষের মায়ের চিকিৎসা করাতে যারা বাধা দেয়, তাদের প্রতি আমাদের ঘৃণা হয়। তার চিকিৎসার দাবিতে সমাবেশ করতে চাইলে তাতেও বাধা এলো।
তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে পাঠানোর সুযোগ করে দেওয়া হোক। এটি তার মৌলিক অধিকার, মানবিক অধিকার। বেগম খালেদা জিয়া তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, দুবার বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন। তাকে মিথ্যা অভিযোগে কারাগারে পাঠানো হলো।
এদিকে সমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে মিছিলসহ জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। সমাবেশ শেষ হলেও দুপুরের পরও মিছিল আসা অব্যাহত থাকে। এসব মিছিলে ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে, খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাইসহ’ নানান শ্লোগানে মুখর ছিল নেতাকর্মীরা।
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে শহরের শহিদ সরণি সড়কে সোমবার বিকালে সমাবেশের ডাক দেয় কক্সবাজার জেলা বিএনপি।
বিএনপির ডাকা সমাবেশস্থল থেকে ১০০ গজ দূরে শহিদ মিনারে গণতন্ত্রের বিজয় উদযাপন কর্মসূচি দেয় যুবলীগ। একই জায়গায় দুদল কর্মসূচি ডাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় সোমবার সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক সাবেক সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি অনেক দিন আগে নেওয়া। একটি পরিকল্পিত ঘটনার জেরে পূর্বের অনুমতি বাতিল করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এটি অমানবিকতার পরিচয়। এ কারণে আমরা ওই এলাকা থেকে সরে এসে ঈদগাহ মাঠে সমাবেশ করলাম। এতে আমাদের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী যোগ দিয়েছেন।
সকাল থেকেই ১৪৪ ধারা জারি করা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ, র্যা ব মোতায়েন করা হয়। তাদের সঙ্গে যোগদেন চারজন ম্যাজিস্ট্রেট।
সূত্র জানায়, প্রশাসনিক ঝামেলা এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করা সমাবেশস্থল পরিত্যাগ করে ভিন্ন স্থানে স্বল্প সময়ে পথসভার মতোই সমাবেশ সমাপ্ত করে বিএনপি। ছোট ছোট মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জড়ো হন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে পুলিশের বাধায় সেই মহাসমাবেশ ১৫-২০ মিনিটেই শেষ হয়ে যায়।
বিএনপির মহাসমাবেশে জেলা ও উপজেলাপর্যায়ের নেতাদের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীমও উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী নাছিমা আক্তার বকুল বলেন, ৫ ঘণ্টার মহা সমাবেশ ছিল। কিন্তু আমরা পুলিশের বাধায় অতটা সময় থাকতে পারিনি। তবে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে মিছিল নিয়ে ঈদগাহ ময়দানে জমায়েতের পর মহাসমাবেশ হয়।
এদিকে সমাবেশ শেষ হলে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক ও কক্সবাজার ৩ আসনের সাবেক সাংসদ লুৎফর রহমানের কাজলের শহরের কলাতলী রোডস্থ বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ ও দলীয় নেতাকর্মীরা।
জেলার পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, উত্তপ্ত পরিস্থিতির আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যেন না ঘটে সে জন্য সকাল থেকে প্রশাসন মাঠে আছে। সমাবেশেও পুলিশ ছিল। এখন পর্যন্ত কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি।