খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বেড়েছে : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন, ‘গণতন্ত্রের মা’ ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তার সুচিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ নেয়ারও কোনো সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। না দেয়া হচ্ছে মুক্তি, না সুচিকিৎসা। আইনত জামিনযোগ্য মামলাতেও জামিন দেয়া হচ্ছে না।

আজ মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন। নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

রিজভী বলেন, ‘শুধু নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই শেখ হাসিনা প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীকে বাইরে থাকতে দেননি। কারণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে আপসহীন থাকতেন। ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে তার প্রবল অবস্থান থাকতো। তাই এখন অসুস্থতা-যন্ত্রণা ও মানসিক নির্যাতনের এক বিষাদঘন পরিবেশে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে দেশনেত্রীকে। এই মুহূর্তে দেশনেত্রীকে সুচিকিৎসা দিতে হবে এবং নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ভুয়া ভোটের সরকারের অবৈধ শাসনের শুরুতেই দেশব্যাপী চরম অরাজকতা বিরাজ করছে। কোথাও যেন কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে নেই। আইনশৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। গুম-খুন-বিচার বহির্ভূত হত্যার সাথে সামাজিক অনাচার মহামারী আকার ধারণ করেছে।’

‘বিএনপি কিয়ামত পর্যন্ত অভিযোগ বা নালিশ করতেই থাকবে’ গতকাল ওবায়দুল কাদেরের দেয়া এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘বিএনপির নালিশ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের পক্ষের নালিশ, দেশে গণতন্ত্র কায়েম করার জন্য নালিশ, অনাচারের বিরুদ্ধে নালিশ, বাক-স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য নালিশ, দেশের মানুষের শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য নালিশ, লুট হওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের কবল থেকে উদ্ধারের নালিশ, মানুষের ন্যায় বিচারসহ সুশাসন প্রতিষ্ঠার নালিশ, নজীরবিহীন মিড নাইট ভোটের বিরুদ্ধে নালিশ, আওয়ামী সরকারের অবৈধ সত্তার বিরুদ্ধে নালিশ। এই নালিশ শুধু ন্যায়সঙ্গত নয়, এটি হচ্ছে সময়ের দাবি। এই নালিশ মিড নাইট সরকারের অবৈধ সকল কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সতর্ক সাইরেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই নালিশগুলোই প্রতিবাদের আকারে রাজপথে ঢেউ তুলবে।’

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পুলিশী মামলা দিয়ে হয়রানি করতে গিয়ে বিচার-ব্যবস্থাকে নড়বড়ে করে ফেলা হয়েছে। এদেশে আওয়ামী ক্ষমতাসীনরা চাইলেই মামলা দিতে পারে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যান্য মিথ্যা মামলার সাথে ড্রাগের মামলা দিয়ে হেয় করা হচ্ছে। আটক বিএনপির বহু নেতাকর্মীকে তাদের আইনজীবীদের সাথে দেখা করতে দেয়া হয় না।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কারাবন্দি কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ^াস, হাবিব উন নবী খান সোহেল, লায়ন আসলাম চৌধুরী, ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মীর সরফত আলী সপু, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, শহিদুল ইসলাম বাবুল, একরামুল হক বিপ্লব, মামুনুর রশিদ মামুন, শেখ মোহাম্মাদ শামীম, শেরপুর জেলা বিএনপির সেক্রেটারি হযরত আলী, চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি মো: আবুল হাশেম বকর, ধানের শীষের প্রার্থী মিয়া নুর উদ্দিন অপু, মনোয়ার হোসেন, ছাত্রনেত্রী আরিফা সুলতানা রুমাসহ দেশব্যাপী হাজার হাজার বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন রিজভী।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top