ময়মনসিংহে প্রতিপক্ষের উপর প্রতিশোধ মেটাতে খাদিজা(২২) নামে এক গৃহকর্মীর উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে পাষন্ডরা।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ সদরের ভাটিকাশর এলাকার নূরুল ইসলামের গৃহকর্মী খাদিজার উপর নির্যাতন চালায় নুরুল ইসলামের ভাই আমিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সেলিনা আমীন, মেয়ে দিলারা আমীন ও কাজের ছেলে রিপন মিয়া। রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খাদিজা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডের ১২ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, নুরুল ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম দুজনই সহোদর ভাই। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের রাউলের চর এলাকায়। বহু বছর আগে তারা ময়মনসিংহ শহরের ভাটিকাশর এলাকায় বসতি স্থাপন করে। সেসময় থেকে দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী নূরুল ইসলামের অবর্তমানে মেয়ে রিমি ও ছেলে অপু বাবার জমি ভোগ দখল করে আসছিল। এদিকে রিমি তার সংসারের দেখাশুনার জন্য ১৭ বছর আগে রাউলের চর থেকে থেকে মৃত আব্দুল গফুরের মেয়ে খাদিজাকে নিয়ে আসে।
এদিকে খাদিজা রিমির কথামতো সংসারের দেখাশুনা শুরু করে। কিছুদনি পর পর আমিনুল ইসলাম তার ভাই নুরুল ইসলামের জায়গা দখল করার চেষ্টা করলে রিমির নির্দেশে গৃহকর্মী খাদিজা আমিনুল ইসলাম ও তার সঙ্গীদের বাধা দেয়। প্রতিবার বাঁধা দেয়ার সময় গৃহকর্মী খাদিজার উপর চড়াও হন আমিনুল ইসলাম ও তার সঙ্গীরা।
অভিযোগে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে আমিনুল ইসলাম তার কাজের ছেলে রিপন মিয়ার মাধ্যমে নূরুল ইসলামের জায়গা দখল করে ছোট্ট চারা গাছ লাগায়। এসময় নূরুল ইসলামের জায়গায় গাছ লাগাতে রিপর মিয়াকে নিষেধ করলে আমিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সেলিনা আমীন, মেয়ে দিলারা আমীন ও রিপন মিয়া অতর্কিত গৃহকর্মী খাদিজাকে টেনে হিঁচড়ে নির্যাতন করে। এসময় আশপাশের লোকজন উদ্ধার করতে আসলে বাসার গেট আটকিয়ে নির্যাতন করায় কেউই খাদিজাকে উদ্ধার করতে পারেনি। দীর্ঘ নির্যাতনের পর খাদিজাকে বাসার বারান্দায় ফেলে রাখলে রিমা ও অপু সন্ধায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এব্যাপারে নূরুল ইসলামের ছেরে অপু ময়মনসিংহ লাইভকে বলেন, তার বাবা দেশে না থাকায় সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে চাচা আমিনুল ইসলাম ও তার সন্তানেরা। ইতোমধ্যে চাচা আমিনুল ইসলাম ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখায় তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এমনকি বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর অপুকে হত্যা করে কারাগারে যাওয়ার হুমকি দেয় বলেও জানান অপু। অপু আরও জানান, এ ঘটনায় খাদিজা বাদি হয়ে ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো শাহ কামাল আকন্দ বলেছেন, বিষয়টি আমাদের গোচরে আছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।