বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যে লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছিলো, ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও সেটা বাস্তবায়িত হয়নি। স্বাধীনতার চেতনা ছিলো একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু এই স্বৈরাচারী, কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিরোধী দলকে নির্মূল করছে।
১৫ ডিসেম্বর সিলেট মুক্ত দিবস উপলক্ষে বিকেল ৩টায় নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারী মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
এর আগে বেলা ২টা থেকে শুরু হয় অনুষ্ঠানের কার্যক্রম। জাতীয়, দলীয়, দেশাত্মবোধক ও গণসংগীত পরিবেশনের পর বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয় অতিথিদের আলোচনা।
ফখরুল বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধ কোনো একজন ব্যক্তি বা দল করেনি। এ দেশের সর্বস্তরের মানুষ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। কিন্তু শহিদ জিয়াউর রহমান ও আতাউল গনি ওসমানীসহ অনেক বীরদের অবদান স্বীকার করে না আওয়ামী লীগ। ১৬ ডিসেম্বর জাতীয়ভাবে যে সুবর্ণজয়ন্তী উদযান করা হয়েছে সেখানে শেখ মুজিব ছাড়া আর কারো নাম নেয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সিলেট শত্রুমুক্ত করতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। কিন্তু জোর করে ক্ষমতায় থাকা এ সরকার প্রকৃত ইতিহাস মুছে দিয়ে একটি
ভ্রান্ত গল্প নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চায়।
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, বর্তমান সরকার খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ঝুলিয়ে দিয়ে তাকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। বেগম জিয়া অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বর্তমানে তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সিলেট বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম।
এদিকে, সংগীতানুষ্ঠানের পরে ও অতিথিদের বক্তব্যের আগে বিএনপির সমাবেশে দু’পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছুড়াছুড়ি এবং পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শনিবার বেলা ২টা ৪০ মিনিটের দিকে বিভিন্ন নেতার পক্ষে স্লোগানকে কেন্দ্র করে তাদের সমর্থকদের মধ্যে এ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় সমাবেশস্থলের সামন থেকে এক পক্ষ অন্যপক্ষকে চেয়ার নিয়ে ধাওয়া করলে উত্তেজনা তালতলা ভিআইপি রোড পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এসময় সুরমা মার্কেট ও তালতলা এলাকার ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে দোকানপাট লাগিয়ে দেন। অপরপক্ষও চেয়ার নিয়ে প্রথম ধাওয়াকারীদের দিকে পাল্টা ধাওয়া করে। পরে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের আধাঘণ্টার প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে অতিথিরা বক্তব্য শুরু করেন। পরে সন্ধ্যা ৫টায় অনুষ্ঠানের সভাপতি সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সমাবেশ সমাপ্ত করা হয়।