যুক্তরাষ্ট্রের ছয় অঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে শুধু কেনটাকিতেই ৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।
প্রায় ৩২২ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়া ঝড়ের কবলে পড়ে অসংখ্য বাড়ি ও দোকানপাট নষ্ট হয়েছে। খবর বিবিসির।
কেনটাকির বিভিন্ন জায়গায় চারটি টর্নেডো আছড়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। একটি টর্নেডো প্রায় ৩৬৫ কিলোমিটার জুড়ে আঘাত হেনেছে।
কেনটাকি ছাড়াও মিসৌরি, আরকানসাস, ইলিনইস, টেনিসি ও মিসিসিপিতে আঘাত হানে এ টর্নেডো।
সব শহর মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানা গেছে। কেনটাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার বলেন, আমি এমন বিধ্বংসী ঝড় দেখিনি।
কেনটাকিতে অর্ধশতাধিক মানুষ মারা গেছেন। সংখ্যাটা ৭০-এর ওপরেও হতে পারে। দিনের শেষে ১০০ ছাড়িয়ে গেলেও অবাক হওয়ার থাকবে না।
পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ১৮৯ জাতীয় নিরাপত্তাকর্মীকে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেশিয়ার। মেফিল্ড নামক ছোট শহরেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
বেশিয়ার জানান, টর্নেডো এই এলাকার একটি মোমবাতি কারখানাকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে গেছে, ওই সময় সেখানে প্রায় ১১০ জনের মতো ছিল; কারখানাটির ছাদ ভেঙে পড়ে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
কারখানাটির ভেতরে থাকা কিয়ানা পারসন্স পেরেজ জানান, শ্রমিকরা বাতাসের শব্দ পায় ও প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এর উপস্থিতি অনুভব করে তখন বিদ্যুৎ চমকও শুরু হয়, এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাদ ধসে পড়ে।
মেফিল্ডের কেন্দ্রস্থলের পাকা ভবনগুলো ভেঙে পড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, কাছে পার্ক করা গাড়িগুলো ইট ও ধ্বংসাবশেষের নিচে প্রায় চাপা পড়ে আছে।
টুইটারে আসা ছবিতে দেখা গেছে, মেফিল্ডের গ্রেভস কাউন্টির আদালত ভবনের ছাদ ভেঙে পড়েছে।
বেশিয়ার জানান, শনিবার ভোরে কেনটাকির ৫৬ হাজারেরও বেশি লোক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ছিলেন। রাজ্যটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন তিনি।
রাতে ধারাবাহিক কয়েকটি বজ্রঝড় থেকে টর্নেডোগুলোর উৎপত্তি হয়। এর মধ্যে আরকানসর উত্তরাঞ্চলে উৎপত্তি হওয়া একটি ‘সুপার সেল’ ঝড়ও ছিল। এই ঝড়টি আরকানস থেকে মিজৌরি, টেনেসি ও কেনটাকিতে প্রবেশ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের ঝড় পূর্বাভাস কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ রজার অ্যাডওয়ার্ড বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটি এগিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকটি প্রাণঘাতী টর্নেডো সৃষ্টি করে। এদের মধ্যে একটি সম্ভবত অনেক দূর পর্যন্ত গেছে। প্রাণঘাতী টর্নেডোটি এর অংশ ছিল।’
ঝড় পূর্বাভাস কেন্দ্রের অপারেশন্স চিফ বিল বান্টিং জানিয়েছেন, অন্তত পাঁচটি রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা টর্নেডোর তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।