টাকা চেয়ে না পেয়ে ুব্ধ হয়ে ভাবীকে হত্যা করে স্বর্ণালঙ্কারসহ দামী জিনিসপত্র নিয়ে যায় লিমন। নিয়মিত ভারতীয় ধারাবাহিক টিভি ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখা লিমন এ ঘটনাকে চুরি হিসেবে প্রমাণের চেষ্টাও চালায়। তবে লিমন গ্রেফতারের পর পুলিশের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে ভাবীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সে নিয়মিত ক্রাইম পেট্রোল দেখে হত্যাকাণ্ডের কৌশল রপ্ত করেছে বলে জানিয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানার কালিরহাট এলাকার হাসিনা বেগম খুনের বিষয়ে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম এ তথ্য জানান। তিনি গতকাল বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
এর আগে হাসিনা বেগম খুনের অভিযুক্ত আসামি মো: ফরহাদ হোসেন লিমনকে (২২) পুলিশ গ্রেফতার করে। সে চাঁদপুরের পাইকপাড়া এলাকার আবুল কাশেম পাটোয়ারীর ছেলে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে আকবর শাহ থানার কালিরহাট ১ নম্বর গলির একটি ভাড়া বাসায় হাসিনা বেগম (৩২) নামে এক নারী খুন হন। তিনি একজন গার্মেন্ট কর্মী। তার স্বামী সৌদি প্রবাসী এবং একমাত্র ছেলে আবির হোসেন (১২) নেছারিয়া মাদরাসার হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছে।
অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম বলেন, একই বিল্ডিংয়ে ব্যাচেলর হিসেবে বসবাস করত নিহত হাসিনার দেবর মো: ফরহাদ হোসেন লিমন (২২)। হাসিনা খুনের পর নিহতের ভাই মো: মানিক বাদি হয়ে আকবর শাহ থানায় একটি এজাহার করেন। সেখানে তিনি বোনের দেবর ফরহাদ হোসেন লিমনকে হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করেন। এজহার দায়েরের পর পুলিশ গত ৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে ফরহাদ সে রাতে ভাবীকে খুন করার চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয়। তার তথ্যমতে, লুট হওয়া কানের দুল, চেইন, ব্রেসলেটসহ স্বর্ণালঙ্কার ও অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফরহাদ বলেন, ৭ ফেব্রুয়ারি গার্মেন্ট থেকে বাসায় ফিরে তার বসতঘরের পাশে রান্নাঘরে খাওয়ার পানি গরম করতে যায়। এই অবস্থায় হাসিনা বেগমের দেবর ফরহাদ হোসেন লিমন টিভি দেখার কথা বলে তার ঘরে আসে। পানি গরম করে হাসিনা বেগম নিজ কে ঘুমিয়ে পড়লে তার দেবর ঘুমন্ত অবস্থায় দুই হাত দিয়ে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে হাসিনাকে। এর পর তার শরীরে পরিহিত স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল নিয়ে সে পালিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মো: কামরুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (পাহাড়তলী) পংকজ বড়ুয়া, আকবর শাহ থানার ওসি জসিম উদ্দিন ও পরিদর্শক (তদন্ত) মুহিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।