৪ উইকেট নিয়ে প্রথম সেশনটা বাংলাদেশের

প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন ৮০তম ওভার চলছে তখন। তাইজুলের শেষ বলে ক্যাচ উঠে সেঞ্চুরিয়ান আবিদ আলীর। কিন্তু স্লিপে দাঁড়ানো নাজমুল সহজ সেই ক্যাচ নিতে পারলেন না। ফাঁক গলে বল বেরিয়ে যাওয়ায় হয়ে যায় চার! এই উইকেট নিতে পারলে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন আরও বেশি স্বস্তি নিয়ে শেষ করতে পারতো বাংলাদেশ। সেটি না হলেও ৪ উইকেট শিকারে দারুণ একটি সকাল কাটিয়েছে স্বাগতিকরা। প্রথম সেশন শেষে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২০৩ রান। তারা এখনও পিছিয়ে ১২৭ রানে।

স্পিনারদের দাপটে পাকিস্তান পুরো সেশনেই চাপে ছিল। ফলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে ৫৮ রান যোগ করতে পারে সফরকারী দল। বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন স্পিনাররা। তাইজুল নেন তিনটি, মিরাজ একটি।

টেস্ট ক্রিকেটের রোমাঞ্চও এখানেই। প্রতিটি সেশনেই রং পাল্টায়। গতকাল পাকিস্তানের প্রতিরোধ ভাঙতে না পারা বাংলাদেশই যেমন। তৃতীয় দিন সকালে শুরুটা করে দারুণ। প্রথম ওভারে তুলে নেয় দুটি উইকেট।

পাকিস্তানের ওপেনিং জুটির প্রতিরোধ ভেঙে দিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ৫৮তম ওভারের পঞ্চম বলে উঠে লেগ বিফোরের আবেদন। আব্দুল্লাহ শফিক কাট করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দেরি করে ফেলায় বল প্রথমে আঘাত হানে প্যাডে। ফলাফল আম্পায়ার আঙুল তুলতে দেরি করেননি। ১৬৬ বলে ৫২ রান করে ফেলা এই ওপেনারকে সঙ্গে সঙ্গে ফিরতে হয়েছে সাজঘরে। তাইজুলের আঘাতে ভেঙেছে ১৪৫ রানের ওপেনিং জুটি।

কাকতালীয় বিষয় হচ্ছে গতকালকে ঠিক একই ভঙ্গিতে আউটের সুযোগ ছিল শফিকের। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের বল ব্যাট না প্যাডে আগে লেগেছে, তা নিয়ে দ্বিধায় বাংলাদেশ রিভিউ নেয়নি। নিলে ৯ রানেই বিদায় নিশ্চিত হতো এই ব্যাটারের। তাহলে হয়তো দৃশ্যটাও ভিন্ন হতে পারতো!

জুটি ভেঙে ফেলার পর স্বাভাবিকভাবেই নতুন ব্যাটসম্যান নড়বড়ে থাকেন। পরের বলে এই নড়বড়ে পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন আজহার আলী। লেগ বিফোরে সাজঘরে ফিরেছেন রানের খাতা খুলবার আগেই।

টানা দুই বলে দুই উইকেট পরে গেলে একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকেন আবিদ আলী। চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরিও তুলে ফেলেন। তার সঙ্গে অধিনায়ক বাবর আজম জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ৪৬ বলে ১০ রান করা বাবরকে অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেছেন মিরাজ।

তাইজুলের ঘূর্ণিতে নতুন নামা ফাওয়াদ আলমও দাঁড়ানোর সুযোগ পাননি কোনও। মারাত্মক টার্ন করা বল ভেতরে ঢুকে পড়েছিল। বল বামহাতি ফাওয়াদের গ্লাভসে লেগে জমা পড়ে লিটন দাসের হাতে! শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নিয়েই মিলেছে সাফল্য। ১৫ বল খেলে ফাওয়াদ সাজঘরে ফিরেছেন ৮ রানে।

অথচ প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ৩৩০ রানে গুটিয়ে দিয়ে গতকাল পাকিস্তান দুই সেশন পার করে দেয় কোনও উইকেট না হারিয়ে। বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে সফরকারীরা দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল ১৪৫ রানে।

Share this post

scroll to top