পটুয়াখালীর বাউফলে দুই ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুরে ইউএনওর অফিস কক্ষের পাশে এ ঘটনা ঘটে
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও দাশপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান এ এন এম জাহাঙ্গির হোসেন ওই সময় উপজেলা পরিষদ ভবনের দোতালায় নির্বাহী অফিসারের অফিস কক্ষের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন নির্বাহী অফিসারের অফিস কক্ষের পশ্চিম পাশে ২০৮ নম্বর কক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কনকদিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বসা ছিলেন।
তিনি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেনকে দেখে বলেন,‘ কিরে শ্যালা কই যাও? প্রতি উত্তরে তিনি বলেন, ‘ দুলাভাই সামনে যাই’। এরপর হঠাৎ করে চেয়ারম্যান শাহিন চেয়ার থেকে উঠে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেনের দিকে তেড়ে গিয়ে বলেন, ‘তুই আমার কিসের দুলাইভাই? এই বলে তার দুই গালে সজোড়ে দুইটি চড় মারেন। এ সময় দু’জনের মধ্যে ধাক্কা ধাক্কি ও মারামারি হয়। একপর্যায়ে চিৎকার শুনে ইউএনও মো: আল আমিন তার কক্ষ থেকে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং দুই চেয়ারম্যানকে দুই দিকে সড়িয়ে দেন।
এ নিয়ে কিছু সময়ের জন্য পরিষদ এলাকায় দুই চেয়ারম্যানের অনুসারিদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার পর পরিবেশ স্বাভাবিক হয়।
চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ‘চেয়ারম্যান শাহিন আমার ওপর হামলা করেছেন। যা পরিষদের কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা আছে। ঘটনাটি আমি মৌখিক ভাবে বাউফল থানার ওসিকে জানিয়েছি। তাকে লিখিত ভাবেও জানাবো। এছাড়াও ইউএনও স্যারের মাধ্যমে লিখিত ভাবে বিষয়টি ডিসি স্যারকে জানাবো।’
চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, আমি একটি পে-আর্ডার আনার জন্য উপজেলা পরিষদে যাই। তখন ওনি (চেয়ারম্যান দাশপাড়া) আমাকে দেখে তার রাসেল নামের এক অনুসারিকে বলেন, ‘ওই গুন্ডা যায়।’ আমিও তখন তাকে মন্দ কথা বলি। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির বলেন ধর শ্যালাকে। এরপর তার অনুসারি রাসেল চাকু বেড় করে আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করলে আমি কিছুটা সরে যাই। এ সময় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির পিস্তল বেড় করলে আমি চিৎকার দিলে ইউএনও স্যার এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সব ঘটনা সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড আছে।’
বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘দুই চেয়ারম্যানই মৌখিক ভাবে ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছেন। এ ছাড়াও ইউএনর কার্যালয় থেকে আমাকে ঘটনাটি জানানোর পর আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে লিখিত ভাবে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আল আমিন বলেন, ‘চিৎকার শুনে প্রথমে আমি মনে করেছি অফিসের বাইরে হয়তো কোনো ঘটনা ঘটেছে। পরে যখন বুঝলাম আমার অফিস কক্ষের কাছে ডাকাডাকি হচ্ছে, তখন আমি গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি এবং দুই চেয়ারম্যানকে দুই দিকে সড়িয়ে দেই। এ ঘটনাটি সত্যিই দুঃখজনক। জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের এ আচরণ কাম্য ছিল না। ঘটনাটি আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানিয়েছি।’