ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠে জাতীয় সংসদের অধিবেশন। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দুই সংসদ সদস্য এই উত্তাপ ছড়ান। অধিবেশন শুরুর প্রথম দিন পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির তীব্র সমালোচনা করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আলোচনার সূত্রপাত করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, কোভিড মোকাবিলা করে মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেন, ঠিক সেই সময় হঠাৎ করে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি করা হলো। বলা নেই, কওয়া নেই, কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। গত কয়েক বছরে একসঙ্গে এত পরিমাণ মূল্যবৃদ্ধি করা হয়নি।
শুক্র ও শনিবারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ানো হলো বৃহস্পতিবার। তারপর পরিবহণগুলো ধর্মঘটে চলে গেল। এতে করে পরীক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ডিজেলের দাম বাড়ার পর বাসভাড়া ২৭ শতাংশ, নৌযান ভাড়া ৩৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। যেটা তেলের মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় অনেক বেশি। জানি না এখানে কেন সমন্বয় নেই।
মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ৭৫ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। বর্তমান সরকার যেহেতু নির্বাচিত সরকার। জনগণের কথা চিন্তা করলে কোভিডের অবস্থায় হঠাৎ করে এই মূল্যবৃদ্ধি না করে কি বিকল্প ব্যবস্থা করা যেত না? এমনিতেই বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরমধ্যে তেলের কারণে অন্যান্য পণ্যের মূল্য আরও বৃদ্ধি হচ্ছে।
তিনি এ সময় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আল্লাহর ওয়াস্তে দেশের মানুষ তেলের মূল্যবৃদ্ধির জন্য যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এজন্য হয় আপনি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন, না হয় বিকল্প কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মানুষকে বিপজ্জনক অবস্থা থেকে মুক্তি দেন। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমতে শুরু করেছে বলেও এ সময় উল্লেখ করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব।
পরে একই দলের ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে চরমভাবে আঘাত করেছে। দ্রব্যমূল্যও বেড়ে গেছে। প্রতিবেশী দেশ স্পর্শকাতর এই জ্বালানির মূল্য না বাড়িয়ে ঠিক রেখেছে। আমাদের সরকার ইচ্ছা করলে এটা করতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে যায়, তখন কিন্তু আমাদের এখানে কমানো হয় না। অজুহাত দিয়ে দাম বাড়ানো হলে সেটা কত শতাংশ হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের চিন্তা করা উচিত। আমরা কত পরিমাণ বাড়াতে পারি। বৃদ্ধির পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ কেবিনেটের নতুন করে চিন্তা করা উচিত। কারণ জনস্বার্থ অগ্রাধিকার। জনস্বার্থে এটা পুনর্বিচেনা করুন। হয় মূল্য কমান, না হয় ভর্তুকির ব্যবস্থা করুন।