ময়মনসিংহে সাবেক স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে শাকিল আহমেদ নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
শনিবার সকালে নগরীর পাটগুদাম সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত শাকিল আহমেদ নগরীর বয়রা ফসলির মোড় এলাকার হারুন অর রশিদের ছেলে।
ভুক্তভোগী নারীর নাম আফরিন জোহানা সরকার। তিনি নগরীর চরনীলক্ষীয়া গ্রামের আসলাম উদ্দিনের মেয়ে।
তিনি নগরীর নাসিরাবাদ কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাকিলদের এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করার সুবাদে আফরিনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৯ সালে শাকিলের সঙ্গে আফরিনের বিয়ে হয়। এই নিয়ে দুই পরিবারের আপত্তি থাকলেও পরবর্তীতে তা মিটমাট হয়। বছর খানেক আগে শাকিল-জোহানার সংসারে সামিয়া নামে এক কন্যা সন্তানের জন্য হয়। শাকিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলে মাস্টার রোলে কর্মরত থাকলেও এক ছাত্রীকে জিম্মি করে চাঁদা দাবির অভিযোগে কয়েক মাস আগে চাকুরিচ্যুত হয়েছেন।
চাকরিচ্যুত হওয়ার পর স্ত্রীর ওপর নানা কারণে অত্যাচার শুরু করেন শাকিল। অত্যাচার সইতে না পেরে চলতি বছরের এপ্রিলে স্বামীকে তালাক দেন জোহানা। কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারছিলেন না শাকিল। প্রক্তন স্ত্রীকে সংসারে ফেরার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু কোনোভাবেই জোহানা সাবেক স্বামী শাকিলকে সহ্য করতে পারছিলেন না। এ কারণে ক্ষুব্ধ শাকিল শনিবার বেলা ১১টার দিকে কলেজ যাওয়া পথে জোহানাকে নগরীর পাটগুদাম এলাকা এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় জোহানা’র চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে শাকিলকে ধরে ফেলে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় আফরিন জোহানা সরকার বাদী হয়ে শনিবার কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন।
আফরিন জোহানা সরকার জানান, তাকে জিম্মি করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করেছিল শাকিল। কিন্তু অনেক অপকর্মের সঙ্গে জড়িত শাকিল তার ওপর নিয়মিত অত্যাচার করায় তিনি তাকে তালাক দিয়েছেন। এখন তার ওপর হামলা করে তাকে রক্তাক্ত করেছে শাকিল।
জোহানা’র বাবা আসলাম উদ্দিন বলেন, ‘শাকিল নানা ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। মাদকের সঙ্গেও শাকিলের সম্পৃক্ততা রয়েছে।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘প্রক্তন স্ত্রীকে তুলে নিতে হামলা করা হয়। কিন্তু স্ত্রী সেই সংসারে ফিরতে রাজী নন। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’