জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবে ফিলিস্তিনিদের সেলফ ডিটারমিনেশন (আত্মনিয়ন্ত্রণ) বা রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনের অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে ভোটাভুটি হয়। অর্থাৎ ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন এবং স্বকীয় রাষ্ট্র হিসাবে মেনে নেয়া হবে কি হবে না তা নিয়ে ভোট প্রদান করে জাতিসঙ্ঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো। সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের হিসাবে মেনে নিতে ১৫৮টি দেশ পক্ষে ভোট প্রয়োগ করে, যেখানে ১০টি সদস্য দেশ (অস্ট্রেলিয়া, ক্যামেরুন, গুয়েতেমালা, হন্ডুরাস, কিরিবাতি, পাপুয়া নিউগিনি, রুয়ান্ডা, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, টোগো টোঙ্গা) ভোট দেয়নি এবং প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ৬টি (ইসরাইল, মার্শাল আইল্যান্ডস, মাইক্রোনেসিয়া, নাউরো, পালাউ, যুক্তরাষ্ট্র) দেশ।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রস্তাবের পক্ষে এই ভোটের ফলকে স্বাগত জানায় ফিলিস্তিন। আরো বলা হয়, ‘আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারই সব অধিকারের ভিত্তি– বিশেষত ফিলিস্তিনিদের জন্য যারা ইসরাইলি দখলের অধীনে দীর্ঘদিন ধরে ভেগান্তির শিকার হয়ে চলেছে।’
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে মধ্য প্রাচ্যের যুদ্ধের পরই ইসরাইল পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুসালেম দখল করে নেয়। এরপর থেকে ওই এলাকায় ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কিন্তু হার মানেনি ফিলিস্তিন। ১৯৬৭-র পর থেকেই আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় ও জাতিসঙ্ঘের হস্তক্ষেপে নতুন সীমানা তৈরি করে পূর্ব জেরুসালেমকে নয়া ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসাবে দেখতে চেয়েছেন ফিলিস্তিনিরা।
এর অর্থ ফিলিস্তিনিরা চেয়েছেন সেলফ ডিটারমিনেশন বা তাদের রাষ্ট্র ও তাদের জন্য পূর্ণ স্বাধীনতা ও স্বীকৃতি। ইসরাইল এই চেষ্টায় বার বার বাধ সাধলেও এতদিন পর জাতিসঙ্ঘের মঞ্চে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট পড়েছে। প্রায় ১৫৮টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও দখলমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে দেখার পক্ষে মত দিয়েছে। আর ইসরাইল ও মার্কিন মিত্ররা বিপক্ষে ভোট দিয়েছে বা ভোট থেকে বিরত থেকেছে।