সাহেদের জামিন খারিজ

উত্তরা পশ্চিম থানায় এক ব্যবসায়ীর করা মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক মামলায় মঙ্গলবার বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির উল্লাহ বলেন, বালু কিনে টাকা না দেওয়ার অভিযোগে উত্তরা পশ্চিম থানায় এক ব্যবসায়ীর করা মামলায় আদালত সাহেদকে জামিন দেননি। তার আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন।

তিনি বলেন, সাহেদের প্রতিষ্ঠানে ওই ব্যবসায়ী বালু সরবরাহ করতেন। কিন্তু সাহেদ টাকা না দিয়ে ঘুরাতে থাকেন।সাহেদ টাকা দেওয়ার কথা বলে ওই ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে মারধরও করেন।পরে সাহেদ গ্রেফতার হওয়ায় ওই ব্যবসায়ী উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করেন।

সাহেদের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাসের টেস্ট নিয়ে জালিয়াতির বিস্তর অভিযোগ উঠার পর গত বছরের ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে।৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

এ ঘটনার পর পালিয়ে যান সাহেদ। ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনা হয়।

করোনা পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্টসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৬ জুলাই সাহেদকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর ১৯ জুলাই তাকে নিয়ে উত্তরার বাসার সামনে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ।

সেখানে সাহেদের নিজস্ব সাদা প্রাইভেটকারে পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ১০ বোতল ফেনসিডিল, একটি পিস্তল এবং একটি গুলি উদ্ধার করা হয়। এরপর উত্তরা পশ্চিম থানায় অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়।

৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর ২৭ আগস্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

২০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত। মামলাটির আট কার্যদিবসে বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা হয়।সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে করা একটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।এই আইনের অপর ধারায় সাহেদকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। রায়ে আদালত বলেছেন, উভয় ধারা একসঙ্গে কার্যকর হবে।

উল্লেখ্য, করোনা টেস্ট নিয়ে প্রতারণার হোতা সাহেদের বিরুদ্ধে সারাদেশে অর্ধশত মামলা রয়েছে। এর বেশিরভাগই প্রতারণার অভিযোগে করা।

Share this post

scroll to top