ছয় বছর আগে আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত রাজধানীর হোসনি দালানের শোক মিছিলে ঘটা জঙ্গি হামলার বিচার এখনো শেষ হয়নি। বিচার শুরু হওয়ার চার বছর তিন মাসের মাথায় এই মামলার ৪৬ জনের মধ্যে ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, করোনার কারণে দু‘দফা আদালত সাধারণ ছুটিতে থাকায় তখন মামলার বিচার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এছাড়া দুই নাবালকের বয়স জটিলতায় বিচারিক কার্যক্রম বিলম্বিত হয়েছে। বর্তমানে করোনার ছুটি শেষ হয়েছে আর বয়স প্রমাণের জটিলতাও শেষ হয়েছে। তাই মামলাটির খুব দ্রুত বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা হবে।
বর্তমানে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালতে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের অবস্থায় রয়েছে। এ মামলায় সবশেষ গত ১৮ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। আগামী ১৫ নভেম্বর মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে।
২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর রাতে হোসনি দালান এলাকায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা বোমা হামলা চালায়। এ ঘটনায় রাজধানীর চকবাজার থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে ১০ জঙ্গিকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ডিবি দক্ষিণের পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিউদ্দিন শেখ। এরপর মামলাটি ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়।
২০১৭ সালের ৩১ মে ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর পর ওই আদালতে মামলার বাদী মো. জালাল উদ্দিন সাক্ষ্য দেন। এরপর ২০১৮ সালের ১৪ মে মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলি হয়। মামলাটি বদলি হওয়ার পর থেকে গতি পায়। ট্রাইব্যুনালে আসার পর ১০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এরই মাঝে অভিযোগপত্রে নাম আসা ১০ আসামির মধ্যে জাহিদ হাসান ও মাসুদ রানার পক্ষে তাদের আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেন, ওই আসামিরা নাবালক। এর স্বপক্ষে জন্মসনদ, পরীক্ষার সনদ জমা দেওয়া হয় ট্রাইব্যুনালে। আদালত সব কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাদেরকে শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তারপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আইন অনুযায়ী ওই দুই আসামিকে শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর বিচারের জন্য সম্পূরক অভিযোগপত্র নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত আবদুল্লাহ বাকি ওরফে নোমান ছিলেন হোসনি দালানে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। হামলার আগে ১০ অক্টোবর তারা বৈঠক করে হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন।