উত্তর আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। আগামী এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে দেশটিতে। তবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে দুই সপ্তাহ পর। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট শারীরীক অসুস্থতার কারণে এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না এমন সম্ভাবনা ছড়িয়ে পড়ার পর হু হু করে বেড়ে গেছে প্রার্থী সংখ্যা। বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, ১৮৬ জন নেতা প্রার্থীতা ঘোষণার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে সরকারি দফতরে আবেদন করেছেন। এই তালিকায় যে সবাই বিশিষ্ট রাজনীতিক তা নয়, আছেন এমন অনেকে যাদের কোন রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতাই নেই।
প্রেসিডেন্ট আবদুল আজিজ বুতেফিকা ২০১৩ সালে স্ট্রোক করার পর থেকে অসুস্থতা নিয়েই গ্যাস সমৃদ্ধ দেশটির শাসন কাজ পরিচালনা করছেন। তবে এবার আর তার পক্ষে প্রার্থী হওয়া সম্ভব হবে না বলেই ধারণা করছেন অনেকে। গত দুই দশক ধরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বুতেফিকা।
২০১৪ সালে দেশটির সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন একশর নিচে, সেইসংখ্যা এবার দ্বিগুণ হয়ে গেছে। যদিও শেষ পর্যন্ত এত সংখ্যাক লোক প্রার্থী হবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকেই প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটারের স্বাক্ষর জোগাড় করতে পারবেন না শেষ পর্যন্ত। তবু এত ব্যক্তির প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি কৌতুহল সৃষ্টি করেছে।
৮২ বছর বয়সী বুতেফিকা পঞ্চম মেয়াদে নির্বাচন করবেন না সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। যদিও ২০১৪ সালের নির্বাচনেই তার শারীরীক অবস্থা রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যোগ্য নয় বলে মনে করা হচ্ছিল। ২০১৩ সালে স্ট্রোক করার পর থেকেই তিনি হুইল চেয়ার ছাড়া চলতে পারেন না। কথা বলতেও কষ্ট হয়। চতুর্থ মেয়াদে তাকে জনসম্মুখে খুব কমই দেখা গেছে।
যদিও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলে তার জয়ের সম্ভাবনা বেশি, কারণ অনেক ভোটারই মনে করেন বুতেফিকা রাজনীতি থেকে বিদায় নিলে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। তার উত্তরাধীকারী কে হবে সেটি নিয়ে লাগতে পারে বিশৃঙ্খলা।
বুতাফিকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী আলী বেনফ্লিস, যিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। এছাড়া আছেন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আলী ঘেদিরি ও ইসলামপন্থী দলের নেতা আবদুল রাজ্জাক মাকরি। এছাড়া অনেক ছোট ছোট রাজনৈতিক দলের নেতারাও প্রার্থী হতে চান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে।
বিশেষ রাজনৈতিক গ্রহ্যণযোগ্যতা না থাকার পরও তারা নানা কারণে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। যেমন সালাহ কেমাচ নামের একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার কারণ হিসেবে বলছেন, ১৯৭৮ সালের যে দিনে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হউরি বুমেদিনে মারা গিয়েছেন সেদিন তার জন্ম হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সম্ভাব্য প্রার্থী লিখেছেন, আমার জন্য এটি ছিলো ভবিষ্যতের ইঙ্গিত। বুমেদিনের প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেয়াকে দায়িত্ব হিসেবে নিতে চাই আমি। তার উত্তরাধীকারীরা তার সেসব প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দিয়ছিলেন।
আরেক ব্যক্তি যিনি পশ্চিমাঞ্চলীয় ওরান শহরের রাস্তা ঝাড়ুদার ছিলেন এক সময়। তিনি বলেছেন, গোশত খেতে চান তাই প্রেসিডেন্ট হতে চাইছেন।