দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে পৃথক দুটি অভিযোগে আট বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে দুদক আইনের ২৭(১) ধারায় পাঁচ বছর ও ২৬(২) ধারায় তিন বছর কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক মো. শহিদুল ইসলাম।
এছাড়া তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আর ৩ মাস কারাগারে থাকতে হবে।
দুটি ধারায় আট বছরের দণ্ড হলেও তাকে পাঁচ বছর দণ্ড ভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক।
তবে বাবরের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম জানান, এ মামলায় ২০০৭ সালের ২৩ জুলাই থেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন বাবর। তিনি ১৪ বছরের অধিক সময় ধরে এ মামলায় কারাগারে আছেন। তাই মোট সাজার প্রায় তিনগুণ দণ্ড ভোগ করেছেন তিনি। সেই হিসাবে এই মামলায় তার মুক্তি পেতে বাঁধা নেই।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন উল্লেখ করে বাবরের আইনজীবী বলেন, আসামি এ ধরনের কোনো অপরাধই করেননি। তারপরও আদালত তাকে সাজা দিয়েছেন। আমরা এ রায়ে সংক্ষুব্ধ। আমরা উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো। যে অপরাধ করিনি সেই দায় কেন মাথায় নেবো?
রায় ঘোষণার পর বাবরের কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, আপনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন কিনা? জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই আপিল করবো। আমি কোনো অপরাধ করিনি। তারপরও সাজা হয়েছে। যেহেতু সাজার দায় ঘাড়ে থাকলো, আমি অপরাধী সাব্যস্ত হলাম। অবশ্যই আমি আপিল করবো।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৮ মে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে যৌথবাহিনীর হাতে আটক হওয়া এ আসামির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের মামলাটি ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি রমনা থানায় দায়ের করা হয়। মামলাটি করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৬ জুলাই দুদকের উপসহকারী পরিচালক রূপক কুমার সাহা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে বাবরের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৫ লাখ ৯১ হাজার ৮৯৬ টাকার অবৈধ সম্পদ রাখার অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি দুদকে ৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩১ হাজার ৩১২ টাকার সম্পদের হিসাব দাখিল করেছিলেন। তার অবৈধ সম্পদের মধ্যে প্রাইম ব্যাংক এবং এইচএসবিসি ব্যাংক দুইটি এফডিআর-এ ৬ কোটি ৭৯ লাখ ৪৯ হাজার ২১৮ টাকা এবং বাড়ি নির্মাণ বাবদ ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৬৭৮ টাকা গোপনের কথা উল্লেখ করা হয়।
একই বছরের ১২ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ১৩ বছর পর এই মামলায় তার সাজা হলো।