নিখোঁজ হওয়ার ২২ বছর পর বাড়ি ফিরলেন সরিষাবাড়ীর ছালেহা

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় নিখোঁজের ২২ বছর পর ১১ অক্টোবর দুপুরে নিজ বাড়িতে ফিরলেন ছালেহা বেগম। ছালেহা বেগমকে ফিরে পাওয়ায় তার পরিবারে বইছে খুশির বন্যা।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার মাইজবাড়ী গ্রামের রসুল মিয়ার সাথে ২৬ বছর পূর্বে ভাটারা ইউনিয়নের চর বাঙ্গালীপাড়া গ্রামের মৃত বিলাত রাজের মেয়ে ছালেহা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের ৪ বছর পর সাংসারিক নানা বিষয় নিয়ে স্বামীর সাথে বিরোধ বাঁধে সালেহা বেগমের। পরে পরিবারের অগোচরে তিনি বাবার বাড়িতে চলে যান। বাবার বাড়ির লোকজন নানা অভিযোগ শুনেও তাকে তার স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এতে ছালেহা বেগম অভিমান করে বাবার বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হন। উভয় পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে আর পায়নি। এভাবে কেটে যায় ২২টি বছর। ওই দুই পরিবারের লোকজন তাকে ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়ে ছিলেন।

১৯৯৯ সালে দেলোয়ার হোসেন নামে দায়রা জজ আদালতের এক উকিল মুন্সিগঞ্জের কাটাখালী গ্রাম থেকে তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে যান। তখনও তিনি তার নাম পরিচয় বলতে পারতেন না। এভাবে পরিচয়হীনভাবে কেটে যায় আরও ১০টি বছর। ১৫ দিন (২৭ সেপ্টেম্বর) পূর্বে তার স্মৃতি ফিরে আসে। তখন ওই উকিল তার নাম পরিচয় জানতে চাইলে তিনি সব খুলে বলেন। পরে তিনি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিষয়টি সরিষাবাড়ী থানাকে অবহিত করেন। পুলিশ এ বিষয়টি নিয়ে খোঁজ শুরু করে। কয়েকদিন পর ভাটারা ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় সালেহার পরিবারের সন্ধান পায় পুলিশ। পরে গত ১০ অক্টোবর সালেহার বড়ভাই সামছুল হক রাজ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ সালেহা বেগমকে মুন্সিগঞ্জ থেকে উদ্ধার করে ১১ অক্টোবর দুপুরে তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে।

এ ব্যাপারে সালেহার বড়ভাই সামছুল হক রাজ বলেন, সালেহা বেগম ২২ বছর পূর্বে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়। অনেক খুঁজাখুঁজি করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ তার ছোট বোনের সন্ধান জানালে তিনি একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। বোনকে পেয়ে তিনি বেশ আনন্দিত বলেও তিনি জানান।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক জানান, মুন্সিগঞ্জ থেকে একটি ফোন আসে। তাতে ভাটারা ইউনিয়ন থেকে ২২ বছর পূর্বে সালেহা নামে কোন মহিলা নিখোঁজ হয়েছে কিনা তা জানতে চাওয়া হয়। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় সালেহার পরিবারের সন্ধান পায় পুলিশ। তাকে উদ্ধার করে ১১ অক্টোবর তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Share this post

scroll to top