ময়মনসিংহের ভালুকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে মা’কে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় ছেলেকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত মোস্তফা ওরফে মুস্তু ভালুকার জামিরদিয়া ডুবালিয়া পাড়ার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
এঘটনায় পুলিশ ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী আসামী মোস্তফার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
আদালত মোট ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক গ্রহণ করে মামলার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণীত হওয়ায় আজ বেলা ১২:৩০টায় আসামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা এবং দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
আদালত মোট ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও পক্ষ বিপক্ষে আইনজীবিদের যুক্তিতর্ক শেষে সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে মোস্তফাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা এবং দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দেন ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকে কবীর উদ্দিন ভূঁইয়া। মামলায় আসামী পক্ষে আইনজীবি ছিলেন মাসুদ তানভীর তান্না।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে ভালুকার কাশর গ্রামে জমি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধা মা মরিয়ম বেগম (৮০)কে গলা কেটে হত্যা করেন মোস্তফা ওরফে মুস্তু।
উল্লেখ্য, মোস্তফার বাবা আব্দুর রাজ্জাক ২০১৮ সালে মারা যাওয়ার আগে মোস্তফার ছেলে নাতনী রহিমের নামে ১৪ শতাংশ জমি লিখে দেন। জমি লিখে দেওয়ার বিষয়টি বাবার মৃত্যুর পর জানতে পারেন ছেলে মোস্তফা। মোস্তফার নামে জমি না লিখে ছেলের নামে দেওয়ায় মোস্তফা ক্ষুব্ধ হন। এ নিয়ে তাঁর মাকে প্রায়ই বকাঝকা করতেন। পরে মোস্তফা বিভিন্ন সময় তার নামে জমি লিখে দিতে মা মরিয়ম ও ছেলে রহিমকে চাপ দিতে থাকেন।
এক পর্যায়ে মা মরিয়ম বেগম যে ঘরটিতে থাকতেন তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য মোস্তফা দীর্ঘদিন ধরে মায়ের ওপর নানাভাবে অত্যাচার চালায়। এমনকি এঘটনায় শাহজালাল প্রতিবাদ করায় তাকে খুনের হুমকি দেয় মোস্তফা। এরপর থেকেই ছোট ভাই শাহজালাল কয়েক মাস ধরে প্রাণভয়ে বাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থাকে।
ঘটনার দিন ১৩ ডিসেম্বর সকালে নিজ বাড়ির উঠানে মরিয়ম কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় মোস্তফা দা দিয়ে তার মা মরিয়মের গলা গেটে হত্যা করেন। পরে কাঁথা দিয়ে মৃত মাকে ঢেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশপাশের লোকজন মোস্তফাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে পুলিশ নিহত বৃদ্ধ মরিয়মের লাশ উদ্ধার করে।