মির্জা কাদেরের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন ফিরোজ আলম মিলন নামের এক ব্যবসায়ী।

ফিরোজ আলম মিলন নিজেকে বসুরহাট পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে দাবি করেন। পারিবারিক সূত্রে প্রায় ৫০ বছর ধরে তিনি বসুরহাট বাজারে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন বলে জানান।

লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ী ফিরোজ আলম মিলন বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টায় কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছাড়া পৌর মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা লোকজন নিয়ে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিরোজ অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং মেসার্স হুমায়ন টিম্বার মার্চেন্ট অ্যান্ড স’ মিলে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। কাদের মির্জা দুই শতাধিক সন্ত্রাসী নিয়ে বুলডোজার দিয়ে আমার প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দেন। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বসুরহাটের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এই জায়গাটির প্রতি পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অশুভ নজর পড়েছে । বছরের পর বছর তিনি নানাভাবে জায়গাটি দখল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।

এই ব্যবসায়ী বলেন, কাদের মির্জা বসুরহাট পৌরসভার প্যাডে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিটি সরকারি খাস জমি উল্লেখ করে নোটিশ প্রদান করেন। এই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে গেলে আদালত আমাদের দলিলপত্র দেখে এই সম্পত্তির ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন (নং- ২৮)। আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকলেও পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

ব্যবসায়ী ফিরোজ আলম বলেন, একদিকে বুলডোজার দিয়ে তার স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়েছে, অন্যদিকে কারখানায় রক্ষিত কোটি কোটি টাকা মূল্যের ফার্নিচার তৈরির ১০টি মেশিন, ১টি স’মিল, ১টি জেনারেটর, ২০টি সিলিং ফ্যান, ১০টি স্ট্যান্ড ফ্যান, সেগুন কাঠ, সেগুন কাঠের রদ্দা, লৌহা কাঠের রদ্দা, গামারি কাঠ, গামারি গাছের পাল্লাসহ তৈরি করা বিভিন্ন আসবাবপত্র পৌরসভার পিকাপ ভ্যান, ট্রাক্টরে করে লুট করা হয়েছে।

ব্যবসায়ী ফিরোজ আলম মিলন অভিযোগ করেন, আব্দুল কাদের মির্জার সঙ্গে আসা সন্ত্রাসী পান লিটন, পাটওয়ারী বাড়ির সাহাব উদ্দিন, বীজ গুদামের পলাশ এবং পলাশের ভাই মুসলিম, গরু সবুজ, ধোয়া স্বপন তার কারখানার আসবাবপত্র নিয়ে বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা তাৎক্ষণিককভাবে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কোম্পানীগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে টেলিফোনে অবগত করি। কিন্তু কেউই আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রক্ষা করতে পারেনি। ঘটনার বিশদ বিবরণ জানিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে অবগত করি। কোম্পানীগঞ্জ থানায় ফোন করার পর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদালতের স্থগিতাদেশ কাগজ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পরও আবদুল কাদের মির্জা ভাঙচুর, লুটপাট অব্যাহত রাখেন।

এই ব্যবসায়ী বলেন, গত এক বছর যাবৎ বসুরহাট পৌরসভার ব্যবসায়ী ও জনগণ পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার হাতে জিম্মি। সেখানে কোনো আইন-কানুনের বালাই নেই। পৌর মেয়রের ইচ্ছাই আইন। যখন-তখন যে কোনো সম্মানীয় ব্যক্তিকে নির্যাতন-অপমান হরহামেশাই সইতে হয়। পৌরবাসী এসব থেকে মুক্তি চান।

তিনি বলেন, বসুরহাট বাজারে পৌর মেয়র আব্দুল কাদের একটা আতংকের নাম। তার ভয়ে বসুরহাট বাজারে দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীর সমাগম বন্ধের পথে। বসুরহাট বাজারের অনেক ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়েছেন কাদের মির্জা।

এই ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্থানীয় সংসদ সদস্য ওবায়দুল কাদেরের কাছে তার সম্পত্তি ফেরতসহ ক্ষতিপূরণ আদায় ও তার পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেন।

Share this post

scroll to top