ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আব্দুল জলিল নামে এক দাদন ব্যবসায়ীর ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব কয়েকটি পরিবার মামলা থেকে মুক্তি ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়নে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভোক্তভোগী আবু নাছের সরকার বলেন, জেলার গফরগাঁও উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের আফছার উদ্দিনের ছেলে প্রভাবশালী দাদন ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল ওরফে আসাম্যা জলিলের রোষানলে পরে আমরা সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি। নয় মাস জেলও কেটেছি। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। গ্রেপ্তার ও আব্দুল জলিলের হামলার ভয়ে কয়েক বছর ধরে আমরা বাড়ি ছাড়া।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ২০ মে ব্যবসার প্রয়োজনে আমি আব্দুল জলিল এর নিকট হইতে ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা ধার করি, সেই সময় আমি সিসি জমা তুলার জন্য চেক দেই আব্দুল জলিলকে। আমি জলিলের কাছ থেকে ধার করা টাকার ১ লাখ নিজ হাতে পরিশোধ করি এবং সোনালী ব্যাংকের শিবগঞ্জ শাখার মাধ্যমে তার সহিত লেনদেন শেষ করি। সেই ব্যাংক এস্টেটমেন্টে তার প্রমাণ আছে। কিন্তু পরবর্তীতে জলিল তাল সাথে লেনদেনকারী নাজিম, আলম এবং সারোয়ারের বিরুদ্ধে চেকের মামলা করে সেই মামলায় আমাকে মিথ্যা সাক্ষি দিতে বলে, আমি সেই ব্যাপারে অসংগতি প্রকাশ করলে তখন থেকে আমাকে শাসাতে থাকে এবং মিথ্যা মামলা দেবার হুমকি দেয় কিন্তু আমি সেটাতে রাজি না হওয়ায় তার কাছে সিসি জমা দেবার সেই চেকে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা তার নিজের হাতে লেখে আমার বিরুদ্ধে মামলা দেয় এবং এই মিথ্যা মামলায় আমি ৯ মাস সাজা ভোগ করি। আমি দীর্ঘ ১০ বছর যাবত এই মামলার কারনে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। এমতাবস্থায় আমার ৪ সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা মা ভাই বোন নিয়ে কষ্টে জীবন অতিবাহিত করছি। মামলায় হাজিরা দিতে এসে ময়মনসিংহ জিরো পয়েন্টে আব্দুল জলিলের হামলারও শিকার হই। তিনি আরও বলেন, আব্দুল জলিল গফরগাঁওসহ সারা জেলায় দাদন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। একসময় তাঁর নুন আনতে পান্তা পুড়ালেও এখন সে মানুষকে জিম্মি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যবসায়িক কাজ ও অভাবের তাড়নায় আব্দুল জলিলের কাছ থেকে চেকের মাধ্যমে সুদে টাকা নেই। সময় মত টাকা পরিশোধ করলে জলিলের কাছে থাকা চেকে নিজের মত টাকার অংক বসিয়ে ২০ জনের নামে ৬ কোটি টাকার মামলা করেছেন। আমার মত তারাও মিথ্যা মামলার ফাঁদে পরে আজ নিঃস্ব। এসময় দাদন ব্যবসায়ির রোষানলে সর্বশান্ত ব্যবসায়ি নাজিম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, ডা. আব্দুল গফুর, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল লতিফ ও সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।