স্টাফ রিপোর্টার : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেয়ে সুনিত রায় নামে ১৫ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ার পর শিশুটির বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। বিকেলে তার মৃত্যু হয়। মৃত শিশু সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার সুরভিত রায়ের পুত্র। আরো ৫ শতাধিক শিশু অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত শিশুদের অভিভাবকরা সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
শনিবার সকাল ১১টার দিকে সরিষাবাড়ীর গণময়দান এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্পে শিশু সুনিত রায়কে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। শিশুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার পর থেকেই বমি ও পাতলা পায়খানায় শুরু হয়। বিকালে তাকে দ্রæত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে শিশু সুনিত রায়ের মৃত্যু হয় বলে জানা যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার ও কর্মচারীরা প্রথমে বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করলেও এক পর্যায়ে শিশু মৃত্যুর খবর চার দিকে ছড়িয়ে পড়লে জেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
এলাকাবাসী জানায়, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ার পর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অনেক শিশুর বমি, কোন কোন শিশুর পাতলা পায়খানা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ শতাধিক অভিভাবক আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে শুরু করে। গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতালে ভিড় ছিল। জামালপুর স্বাস্থ্যবিভাগ ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেয়ে এক শিশু মৃত্যুর ঘটনা স্বীকার করলেও আক্রান্ত অন্যান্য শিশুদের চিকিৎসা ও অভিভাবকদের কাউন্সেলিং চলছে বলে জানিয়েছে। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ার পর এক শিশু মারা যাওয়ায় জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ তৎপর হয়ে উঠেছে।
জামালপুরের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে ডাক্তারদের একটি বিশেষ টিম বিকেল থেকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দিচ্ছে। খবর পেয়ে নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল সংস্থার প্রতিনিধি মাহফুজা রুমা বিকেল থেকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থান করছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা রাতে তথ্য সংগ্রহের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকার চেষ্টা করলে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রভাবশালীরা তাদেরকে বাঁধা দেয়।
জামালপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার গৌতম রায় বলেন, শিশু সুনিত রায়কে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ার পরই তার বমি ও পাতলা পায়খানা হয়। শিশুটি আমাদের এক স্টাফের সন্তান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আর কোনো শিশু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি নেই বলে দাবি করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, এক শিশু মৃত্যুর ঘটনা জানাজানি হলে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়া শিশুর অভিভাবকদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ার পর কি কারণে এমন হলো তা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে এই মুহূর্তে কিছুই বলা যাচ্ছে না।