ফেনীতে বিআরডিবি কর্মীর আত্মহনন নিয়ে তোলপাড়

ফেনী শহরের বারাহিপুর সাহেব বাজার এলাকার বাসা থেকে আনোয়ারা বেগম নামের বিআরডিবির এক কর্মী আত্মহত্যার ঘটনায় তোলপাড় চলছে। মৃত্যুর আগে লিখে যাওয়া সুইসাইডাল দুটি নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য ডিডি শংকর কুমার পাল ও ফুলগাজী উপজেলা এআরডিও পদাবিক কৃষ্ণ গোপাল রায় দায়ী।’

ওই চিরকুটে আনোয়ারা বেগম আরো লিখেছেন, ‘তারা দুইজন চার মাস ধরে আমাকে মানসিক নির্যাতনে রাখছিল। অক্টোবর ১৮ থেকে জানুয়ারি ১৯ পর্যন্ত আমাকে ৫ মাস বেতন ভাতা দেয়নি। গত ৩১ জানুয়ারি সমিতি দলের ম্যানেজারসহ সদস্যদের অফিসে আনি। ডিডি শংকর কুমার আমি ঋণ নিয়েছি বলে দুর্বব্যবহার, স্বীকারোক্তি ও অঙ্গিকারনামা লিখে নেয়। তারপর বাসায় এসে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যাই। আমার স্বামী ফেনীতে হার্ট ফাউন্ডেশনে নেয়ার পর ডাক্তার ঢাকায় রেফার করে। চিকিৎসা শেষে ৭ দিন পর আমি বুধবার ফেনী ফিরে আসি’।

জানা গেছে, ১৯৮৭ সাল থেকে মাঠ সহকারি পদে চাকরি নেন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় পায়াল খোলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ইয়াসিন মজুমদারের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। তার একমাত্র ছেলে ঢাকায় পড়ালেখার পাশপাশি একটি দৈনিকে শিক্ষানবিশ ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। অপর মেয়ে বিয়ের পর স্বামীর বাড়ি থাকেন।

ফেনী মডেল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, চিরকুট জব্দের পর নিহতের স্বজনরা আনোয়ারার মৃত্যুতে বিআরডিবির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার মধ্যরাতে তাদের বাসায় অভিযান চালিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।

তিনি আরো জানান, শনিবার দুপুরে আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের হস্তান্তর করা হয়। একইদিন পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত আনোয়ারা তার ঘরের দরজা না খুললে সন্দেহ হয়। পরে তারা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে আনোয়ারার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। এসময় লাশের পাশ থেকে চিরকুট জব্দ করে পুলিশ।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top