মোবাইল চুরির অপবাদে দড়ি দিয়ে বেধে দুই স্কুল ছাত্রকে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে আহত করার অপরাধে সাবেক সেনা সদস্য জুলফিকার শেখকে আটক করেছে পুলিশ।
মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে রাজবাড়ীর উপজেলার নারুয়া বাজারে প্রকাশ্যে দড়ি দিয়ে বেধে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করেছে দুই স্কুল ছাত্রকে। ঘটনাটি শুক্রবার বিকালের। স্থান নারুয়া বাজারে। শনিবার সন্ধ্যায় এ অভিযোগে থানা পুলিশ সাবেক সেনা সদস্য জুলফিকার শেখকে আটক করেছে।
মারপিটে আহত হয়েছে উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের বিলধামু গ্রামের ফরিদ মোল্যার ছেলে ও বিলধামু আবুল কাসেম মন্ডল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র বিজয় মোল্যা (১১) ও তার কথিত সহযোগী একই গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে ও মধুপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্র আসিক (৭)।
বিলধামু গ্রামের বাবু মোল্যা জানান, সাবেক সেনা সদস্য জুলফিকার শেখ আমাকে ফোন দিয়ে বলেন মোবাইল চুরির অপরাধে আমাদের গ্রামের দুটি ছেলেকে আটকে রেখেছেন তিনি। পরে আমি তাদের দুজনকে নিয়ে এসে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেই। তারা বলে ফোন চুরি করেছে। পরে সকলের উপস্থিতিতে আমার কাছে ওই দুটি ছেলে বুঝে দেয়। আমার সামনে মারপিট করেনি।
মারপিটের শিকার পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র বিজয় মোল্যা জানায়, নারুয়া গ্রামের সুমনের কাছে তাদের একটি ফোন মেরামত করতে দেয়। শুক্রবার সকালে ফোনটি দেওয়ার কথা ছিল। সকালে দোকানে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার বাড়ীতে যাই। বাড়ীতে না থাকায় তার বাবা জুলফিকার শেখের নিকট বললে সে বলে পরে আসো। বাড়ী ফেরার পথে একটি ফোন কুড়িয়ে পাই। বিষয়টি সকলকে জানাই একটি মোবাইল পথে পেয়েছি।
বিকালে ওই দোকানে ফোন আনতে গেলে সুমন ও জুলফিকার আমাদের দুজনকে দড়ি দিয়ে বেধে রেখে মারপিট শুরু করে। চিৎকার করলে বলে একটি কথাও বলবি না। তোরা ফোন চুরি করলি ক্যান।
মারপিটে বাধ্য হয়ে ফোন চুরি করেছি বলে স্বীকার করি। মারপিটে শরীরে রক্ত জমে গেছে।
বিজয়ের বাবা ফরিদ মোল্যা জানান, ছেলেকে মারপিটের কথা শুনে এসে দেখি ছেলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারিভাবে মারপিট করেছে। তাকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক শরীফুল ইসলামের নিকট থেকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আমি এ মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শিশু নির্যাতনকারীর বিচার দাবী করছি।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জুলফিকার শেখ জানান, মোবাইল চুরি সন্দেহে তাদেরকে আটক করি। তাদেরকে দুটি বাড়ি মারার পর মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করে। ফোনও দিয়েছে।
বালিয়াকান্দি থানার এসআই বিল্লাল হোসেন জানান, দুই ছাত্রকে নির্যাতনের দায়ে সাবেক সেনা সদস্য জুলফিকার শেখকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানার অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে আটক করা হয়েছে। নির্যাতিতরা মামলা দিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।