বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক কোচ ও বরেণ্য ক্রীড়া লেখক জালাল আহমেদ চৌধুরী আর নেই। মঙ্গলবার বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল নিশ্চিত করেছেন এ খবর।
চলতি মাসে ১ তারিখ শ্বাসকষ্টের কারণে প্রথমবার আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন জালাল আহমেদ চৌধুরী। পরে চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন। কিন্তু স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায় ১৫ সেপ্টেম্বর আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
দ্বিতীয় দফায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আর উন্নতি ঘটেনি তার। গত শুক্রবার থেকে রাখা হয় ভেন্টিলেশনে, ছিলেন আইসিইউতে। ফুসফুসের সংক্রমণ ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগে শেষ পর্যন্ত চলেই গেলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই ক্রীড়াব্যক্তিত্ব।
তিনি সাবেক ক্রিকেটার ছিলেন, ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে সত্তর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত খেলেছেন ঢাকা ক্রিকেট লিগে। তারপর শুরু করেন কোচিং। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেট প্রশিক্ষক হিসেবে ভারতের পাতিয়ালায় উচ্চতর কোচিংয়ের ওপর ট্রেনিং করেন তিনি।
পরে মোহামডান, ধানমন্ডি, কলাবাগানসহ ঢাকার বেশ কয়েকটি শীর্ষ ক্লাবে কোচিং করান জালাল আহমেদ চৌধুরী। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ জালাল আহমেদ চৌধুরী। একাধারে ক্রিকেটার, প্রশিক্ষক, আম্পায়ার, সাংবাদিক ও লিখিয়ে হিসেবে সবার প্রশংসাধন্য।
প্রশিক্ষক জালাল আহমেদ চৌধুরীর হাত ধরে অগণিত বড় বড় তারকার অভুদ্যয়। জাতীয় দলের প্রথম ওয়ানডে অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনার নজরুল কাদের লিন্টু, রবিন, গোলাম ফারুক সুরু, জি এম নওশের প্রিন্স, তুষার ইমরানসহ অগণিত তারকার বেড়ে ওঠা জালাল আহমেদ চৌধুরীর হাতে।
তিন বছর আগেও তিনি ছিলেন কলাবাগানের কোচ। মোহাম্মদ আশরাফুল যেবার এক লিগে পাঁচটি শতক হাকান, সেই লিগেও তিনি ছিলেন আশরাফুলের দল কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের কোচ।
ক্রিকেট প্রশিক্ষণের বাইরে তিনি ছিলেন দেশ বরেণ্য সাংবাদিক ও ক্রিকেট লিখিয়ে। আশির দশকে তৎকালীন বাংলাদেশ টাইমসেমর স্পোর্টস ইনচার্জ হিসেবে কাজ করেছেন।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী জালাল আহমেদ চৌধুরী বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসজেএ) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। এছাড়া তিনি বিসিবির আম্পায়ার্স ও স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদকের পদেও অধিষ্ঠিত ছিলেন।