দীর্ঘ প্রায় তিন যুগ পর আবার চালু হচ্ছে বসনিয়ার একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। ১৯৯০ এর দশকে যুদ্ধের সময় মসজিদটি ধ্বংস করেছিল সার্ব সৈন্যরা। এত বছর পর আবার এই প্রাচীন মসজিদটি চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বছরের ৭ মে নতুন করে নামাজের জন্য খুলে দেয়া হবে সেটি।
ওসমানীয় খিলাফাহ যুগের এই মসজিদটির অবস্থান বলকান অঞ্চলের দেশ বসনিয়র পূর্বাঞ্চলীয় ফোকা শহরে। নাম আলাকা মসজিদ, যেটি যুদ্ধের সময় সার্ব সৈন্যরা ধ্বংস করে ফেলেছিল।
বসনিয়ার রত্ম নামে পরিচিত মসজিদটি, কেউ কেউ বলে বিউটি অব ফোকা। ২০১৪ সালে মসজিদটি নতুন করে নির্মাণের কাজ শুরু করে তুরস্কের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফাউন্ডেশন। সম্পূর্ণ তুর্কি অর্থায়নে আবার চালু হবে প্রাচীন এই মসজিদ। ইসলামিক ইউনিয়ন অব বসনিয়া হার্জেগোভিনা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বসনিয়ার আগামী মসজিদ দিবসে এটি চালু হবে।
বলকান অঞ্চলের ছোট্ট দেশটি বহু বছর যুদ্ধের পর স্বাধীন হয়েছে সার্বিয়ার কাছ থেকে। সার্ব সৈন্যরা বসনীয় মুসলিমদের ওপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে- যার মধ্যে ১৯৯৫ সালের ৭ মে’র স্রেব্রেনিচা গণহত্যা ইতিহাস বিখ্যাত। সেদিন জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সামনেই হত্যা করা হয় কয়েক হাজার মুসলিমকে।
ওই যুদ্ধে এক হাজারের বেশি মসজিদ ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছিল সার্ব সেনারা। সেসবের স্মরণে প্রতি বছর ৭ মেকে মসজিদ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এক বিবৃতিতে ইসলামিক ইউনিয়ন অব বসনিয়া হার্জেগোভিনা জানিয়েছে, এবারের দিবসটি তাদের কাছে বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে কারণ এবার আলাকা মসজিদ আবার চালু হচ্ছে।
১৫৪৯ সালে নির্মিত হয়েছিল আলাকা মসজিদ যা বসনিয়ার অন্যতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। ওসমানীয় যুগের স্থাপত্য নকশায় এটি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সার্ব সেনার এক বিস্ফোরণে মসজিদটি গুড়িয়ে দেয়। সে সময় মসজিদের পাথরগুলো দূরে নিয়ে ফেলা হয়। আশপাশের আরো ১২টি মসজিদ ধ্বংস করেছিল সার্বিয়ার সৈন্যরা।
বসনিয়া ইসলামিক ইউনিয়নের তথ্যমতে, ওই যুদ্ধে ৬১৪টি মসজিদ, ২১৮টি নামাজ কক্ষ, ৬৯টি কোরআন শিক্ষা কেন্দ্র, ৩৭টি কবরস্তান ও ৪০৫টি মুসলিম ঐতিহ্যবাহী বস্তু ধ্বংস করা হয়। ক্রোয়েশিয় বাহিনীও যোগ দিয়েছিলো এই ধ্বংসকাণ্ডে। এছাড়া অন্তত ১০০ জন ইমামকে হত্যা করা হয়েছিল সে সময়।