‘দৈনিক ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিং ছিলো বিএনপির তথাকথিত উন্নয়ন’

দৈনিক ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং ছিলো বিএনপির তথাকথিত উন্নয়ন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, শুধুমাত্র বিদ্যুৎ খাত নিয়ে তুলনা করলেই বিএনপির দাম্ভিকতা চূর্ণ হতে বাধ্য।

ওবায়দুল কাদের আজ সকালে সচিবালয়ে তার দপ্তরে ব্রিফিংকালে একথা বলেন। আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলেই বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির শাসনামলে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ছিলো চরম স্থবিরতা। বাজেট ছিলো পরনির্ভর, ছিলো না বাস্তবায়নে কোন সক্ষমতা। বিএনপির উন্নয়ন নীতি ও কৌশল ছিলো ভ্রান্ত এবং গণবিরোধী।

বিএনপির শাসনামলে স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনীতির সফল বাস্তবায়ন হয়েছে বলে বিএনপি নেতাদের দাবি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা আদৌ সত্য নয়, তাদের এ দাবি অন্যান্য বক্তব্যের মতই অসত্য ও অন্তঃসারশূন্য। উৎপাদন ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে বিএনপি ধ্বংস করে দিয়েছিলো।

বিএনপি নেতাদের কাছে প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি তাদের সময়ে সারের জন্য কৃষকদের প্রাণ দিতে হয়েছিলো, এসব কি স্থিতিশীলতার নজির?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির ক্ষয়িষ্ণু, মুখোশ পরা অর্থনীতির বিপরীতে টেকসই ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়ন আজ অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্ব অর্থনীতির বিস্ময়। শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নবান্ধব নীতি ও কৌশলের কারণে ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অর্জিত হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, বর্তমানে মাথা পিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২২৭ ডলার।

ক্রমাগত রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, ঈর্ষণীয় প্রবাসী ও রপ্তানি আয়, কর্মসংস্থান, দরিদ্র ও অতিদারিদ্র হ্রাস, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ প্রতিটি সূচকে যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তা সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও টেকসই উন্নয়নের পথকে মসৃণ করেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সূচক এবং মানব উন্নয়ন সূচকেও বাংলাদেশ দিনদিন উন্নতি করছে।

ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বিএনপির সময়কালে অর্থনৈতিক সূচকের পরিবর্তে যে সকল সূচকে তারা উন্নতি করেছিলো তা হচ্ছে- রাজনৈতিক নিপীড়ন, দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাস, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর নির্যাতন, মুদ্রাপাচার ও সাম্প্রদায়িক শক্তির তোষণ ইত্যাদি।

তিনি বলেন, বিএনপি কল্যাণমুখী অর্থনীতির বিপরীতে প্রতিষ্ঠা করেছিলো লুটপাটের অর্থনীতি। দেশের অর্থনৈতিক অন্ধকার গহ্বর থেকে সমৃদ্ধির সোপানে উন্নীত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল অর্থনীতির মর্যাদায় অভিষিক্ত।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সমৃদ্ধ দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করে ইলিশ উৎপাদনে প্রথম ও আউট সোর্সিং এ দ্বিতীয় অবস্থানে, অন্যদিকে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয়, প্রবাসী আয়ে ৮ম, ধান উৎপাদনে ৪র্থ, পাট রপ্তানিতে প্রথম এবং উৎপাদনে দ্বিতীয়, মিঠাপানির মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে।

বিএনপি দেশকে পরনির্ভরশীল ও নতজানু দেখতে চায়, চায় তাবেদার হয়ে থাকতে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে একটি মর্যাদাশীল এবং সমৃদ্ধ অবস্থানে উন্নীত করতে চায়।

বিএনপি নেতারা দুর্নীতির কথা বলেন, অথচ তাদের শাসনামলে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশী দুর্নীতির সময়কাল ছিলো। বিএনপির সময়কাল ছিলো দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য এবং যে কারণে পর পর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো বাংলাদেশ বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ বিএনপি নেতারা মুখরোচক কত কথাই বলেন অথচ তাদের সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তারেক রহমানের পাচারকৃত টাকা আটক করেছিলো যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস। অথচ আজ বিএনপি নেতারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন!

দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকার তার কঠোর অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, বিএনপির শাসনামলে দুর্নীতির অভিযোগে দলীয় কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নজির ফখরুল সাহেবরা দেখাতে পারবেন কি?

Share this post

scroll to top