ভিক্ষা করে কাটছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় পঙ্গু মামুনের জীবন

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাসমাবেশে গ্রেনেড হামলায় পঙ্গু মামুনুর রশিদ মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। দুই পা হারিয়ে লাঠির উপর ভর করে সপ্তাহে দুই দিন রায়পুর ও লক্ষীপুর শহরে ভিক্ষা করে নিজের ও পঙ্গু মায়ের চিকিৎসা, তিন সন্তানের লেখা-পড়ার খরচসহ সংসার চালাতে হচ্ছে মামুনকে।

এখনও তার সে দিনের নারকীয় স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। ১৭ বছর অতিবাহিত হলেও সে দিনের দুঃসহ স্মৃতি আজও কষ্ট দেয় তাকে। ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে নিহত ও আহত পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæত দুই থেকে দশ লাখ টাকা অনুদান পেলেও কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।

বর্বরোচিত এ গ্রেনেড হামলার শিকার লক্ষীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের আঠিয়াতলী গ্রামের পঙ্গু মামুনুর রশিদ (৪৫) ঢাকার মেট্রোপলিটন পুলিশের বাস চালক ছিলেন ।

শুক্রবার (২০ আগষ্ট) রায়পুর শহরে আসলে-কথা হয় মামুনুর রশিদের সঙ্গে, গত ২০০২ সালের ১লা জানুয়ারী থেকে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের গাড়ী চালিয়ে আসছিলেন। যার গাড়ী নং- ঢাকা মেট্ট্রো চ-৭৫৭১, চ-৫২০২, চ-০০২২, লাইসেন্স নং- গপ-০৪৮৯৬২৮ম এবং পরিচয়পত্র নং- ১৯৭৫৫৫১১৪৩৬০৭৪৯২২২। গত ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট জনসভাস্থলে পুলিশের গাড়ী নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় গ্রেনেড হামলার সাথে সাথে মাটিতে পড়ে গেলে মানুষের পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে মারাত্মক আহত হন। এতে তার মাজা, দুই পা, যৌনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন।

ওই সময় কয়েকজন ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করলে তখন উন্নত চিকিৎসা না পেয়ে বাড়ী ফিরে আসে। তার সুচিকিৎসা নিতে ২০০৯ সালের ১ ফেব্রæয়ারী ল²ীপুর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান রায়পুরের সাংসদ এড. নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের সুপারিশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করলেও তা পাওয়া যায়নি। আজও সেই জখম বয়ে চলছে।

পঙ্গু মামুনুর রশিদ পঙ্গু মা, স্ত্রী, তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নিরুপায় হয়ে ভিক্ষা করে তিন সন্তানের লেখা-পড়া, নিজের ও পঙ্গু মায়ের চিকিৎসা ও সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যদি তার ও পরিবারের জন্য একটা বাসস্থানের ব্যবস্থা করতেন, তাহলে উপকৃত হতেন।

এ বিষয়ে সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আবদুস শহিদ জানান, একুশে গ্রেনেড হামলার সময় মারাতœক জখম হয়ে পঙ্গু মামুনুর রশিদ ও তার মাকে ৬ মাস পরপর পঙ্গু সরকারি ভাতা দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে তাকে ও তার পরিবারকে আরোও সহযোগীতা করা হবে।

Share this post

scroll to top