২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার ১৭ বছর হলো। নিম্ন আদালতে রায় হলেও এ হামলার বিচার আটকে আছে উচ্চ আদালতে। চার্জশিটভুক্ত ৫২ আসামির ১৬জন পলাতক। এর মধ্যে আছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। তাকে ফিরিয়ে আনতে ও ইন্টারপোলের রেড নোটিশে দ্বিতীয় দফায় নাম ওঠাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। কিন্তু এখনও ইন্টারপোল থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। নথিপত্রে তাকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) উদ্যোগে ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের অনুরোধে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে। পরে তারেকের আইনজীবীর আবেদনের পর ইন্টারপোলের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে (কমিশন ফর দ্য কন্ট্রোল অব ইন্টারপোলস ফাইলস বা সিসিএফ) রেড নোটিশটি রিভিউ করা হয়। ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি নোটিশটি বাতিল করে ইন্টারপোল।
ওই বছর ২৭ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনারের অনুরোধে ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি মানি লন্ডারিং মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ফের রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোলকে অনুরোধ করা হয়। ২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি ইন্টারপোল থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে জানানো হয়, আইন অনুযায়ী ইন্টারপোলের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে তারেক রহমানের ডাটা মুছে ফেলার সুপারিশ করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ইন্টারপোলের কাছে বাংলাদেশ পুলিশের এনসিবি শাখা থেকে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল একই বিষয়ে তাগিদ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয় ইন্টারপোলে। একই বছরের ২৫ আগস্ট পুলিশ সদর দফতর থেকে ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি দিয়ে বলা হয়, ইন্টারপোল বরাবর পাঠানোর জন্য একজন সিনিয়র আইনজীবী বা অভিজ্ঞ ল’ ফার্মের মাধ্যমে রিভিশন রিকোয়েস্ট লেটার তৈরি করে এনসিবিতে পাঠাতে বলা হয়।
সর্বশেষ এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ল’ ফার্মের মাধ্যমে চিঠিটি ইন্টারপোলে পাঠায় পুলিশ সদর দফতর। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফায় রেড নোটিশ জারির জন্য এখন এনসিবি থেকে ইন্টারপোলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। কিন্তু ইন্টারপোলের সিসিএফ থেকে রেড নোটিশ পুনরায় জারির বিষয়ে এখন পর্যন্ত জবাব পাওয়া যায়নি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) এআইজি মহিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তারেক রহমানসহ পলাতক আসামিদের খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে আনতে এবং রেড নোটিশে নাম ওঠাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে।’