দুই পীরের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২৫

শরীয়তপুরের নড়িয়ার সুরেশ্বর দরবার শরীফে রাস্তার জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দরবার শরীফের দুই পীরের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে নড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত)সহ পাঁচজন পুলিশসদস্য ও উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে।

নড়িয়া থানা ও সুরেশ্বর দরবার শরীফের পীর কামাল নরীর খাদেম মুনসুর মৃধা জানান, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর দরবার শরীফের পীর শাহ নুরে কামাল নুরী ও শাহ নুরী আক্তার চুন্নু মিয়ার মধ্যে দরবার শরীফের মধ্যে এলজিইডি নির্মিত রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চুন্নু মিয়া পীরের ভক্ত ও সমর্থকরা ওই রাস্তার জমি নিজেদের দাবি করে কেটে ফেলার সময় কামাল নুরী পীরের ভক্তরা বাধা দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের ভক্ত ও সর্মথকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে লাঠি সোটা, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় কামাল নুরীর ভক্ত বছির মিয়ায়, নুরুল আমিন, মামুন মিয়া, ওসমান মিয়া, দেলোয়ার ও জাকির হোসেনসহ অন্তত ২০ আহত হয়। এদের মধ্যে কামাল নুরী তার সমর্থক চারজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা বললেও শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী কোনো গুলিবিদ্ধ লোক পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা আহতদের মধ্যে ওসমান, মামুন ও নুরুল আমিনকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে নড়িয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৪ রাউন্ড ফাকা গুলি ছুড়ে। এ সময় দুই পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপে নড়িয়া থানার ওসি তদন্ত আবুবকর মাতাব্বর, কনস্টেবল ইয়াকুব ও ইমাম হোসেনসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়।

এ ব্যাপারে সুরেশ^রের পীর কামাল নুরী বলেন, সুরেশ^ও দরবার শরীফের ভিতরে একটি পাকা রাস্তা চুন্নু মিয়ার লোকজন কেটে ফেলার সময় আমার ভক্তরা বাধা দেয়। আমি ২০১৪ সালে এলজিইডির মাধ্যমে এই রাস্তাটি নির্মাণ করি। এই রাস্তাাটি দিয়ে এলাকাবাসী চলাচল করে। আমার ভক্তরা রাস্তা কাটতে বাধা দিলে চুন্নু মিয়ার ছেলে মাওলা মিয়া আমার ভক্তদের উপর গুলি ছুড়ে। এতে আমার চারজন ভক্ত গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়।

এ বিষয় পীর শাহ নুরে আক্তার চুন্নু নুরীর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।

তবে তার ছেলে মাওলা বলেন, আমাদের এটা পারিবারিক বিষয়। এ ব্যাপারে আমরা কোনো বক্তব্য দিব না।

নড়িয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সুরেশ্বর দরবার শরীফের দুই পীরের ভক্ত ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ২৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এ সময় আমাদের ওসি তদন্তসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষ মামলা করেনি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top