তালেবানের অগ্রযাত্রা এবং রাজধানীর প্রবেশদ্বারে তাদের অবস্থান নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শহরের বাসিন্দারা কাবুল ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে।
কোন পথে শহর ছাড়বে মানুষ তা ঠিক করতে হিমশিম খাওয়ায় রাস্তায় গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে প্রচণ্ড ব্যস্ততা চোখে পড়ছে, কারণ মানুষ তাদের সঞ্চিত অর্থ তুলে নেওয়ার চেষ্টায় ব্যাংকে ভিড় জমিয়েছে।
আফগানিস্তানের সংসদ সদস্য ফারজানা কোচাই বিবিসির কাছ দিনের আরও আগে শহরের দৃশ্য বর্ণনা করে বলেন, আমি আমার বাসা থেকে দেখতে পাচ্ছি মানুষজন আসলে পালানোর জন্য রাস্তা দিয়ে ছুটছে।
তিনি আরও বলেন, আমি জানি না তারা কোথায় যাবার চেষ্টা করছে। ঘর থেকে পালিয়ে তারা কোন রাস্তা দিয়ে কোথায় যাবে জানে না। তারা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে চলেছে। খুবই হৃদয়বিদারক দৃশ্য।
এর আগে খবরে বলা হয় পাকিস্তান জানিয়েছে, তাদের সাথে সীমান্তের আফগানিস্তান অংশের দখল তালেবান গ্রহণ করার পর তারা তোরখাম সীমান্ত পারাপার চৌকি বন্ধ করে দিচ্ছে।
ফলে শহর থেকে বেরুনর একমাত্র পথ এখন কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
কিছু কিছু মানুষ তাদের গাড়ির মধ্যে চাবি রেখেই গাড়ি থেকে নেমে পড়েছে এবং পায়ে হেঁটে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছে, জানিয়েছেন একজন বাসিন্দা।
কাবুল থেকে বিবিসির একজন সংবাদদাতা বলছেন, শহরে মানুষের মধ্যে ‘নজিরবিহীন উদ্বেগ’ দেখা যাচ্ছে।
বহু দোকান বাজার বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু কিছু মানুষ বলেছে তারা জীবনে কখনও এত উদ্বিগ্ন বোধ করেনি।
কিছু কিছু সরকারি দপ্তর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অনেক সেনা সদস্য এবং পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তাদের পদ ছেড়ে চলে গেছে।
কোন কোন এলাকা থেকে বিক্ষিপ্তভাবে বন্দুকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।
রাজধানী কাবুলের অনেক মানুষ গাড়িতে করে শহর থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন, এবং এ জন্য শহরের রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেউ কেউ তাদের গাড়ি রাস্তায় ফেলে রেখে পায়ে হেঁটে বিমানবন্দরে যাচ্ছে।
শহরের বহু দোকান, সরকারি অফিস ও বাজার বন্ধ ।
কোথাও কোথাও সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাদের ডিউটি পোস্ট ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
কাবুলের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত গুলির শব্দ পাওয়া গেছে তবে তা কোথা থেকে আসছে তা জানা যায়নি।