ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) চারুকলা বিভাগের শিক্ষক দ্বন্দ্বে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীদের জীবন। এসব নিয়ে অনেকবার গুঞ্জন হলেও সমাধানের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি শিক্ষক কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আর সেশন জট নিয়ে জোর গলায় কোন শিক্ষার্থী কথা বললেই তাঁকে ইয়ার ড্রপ করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার বছরের অনার্স শেষ করতে সময় লাগে ছয় থেকে আট বছর। শিক্ষকদের ভেতরের অপরাজনীতির কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম সেশন জটের কবলে। এর মধ্যে আবার করোনা মহামারি পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের অনার্স শেষ করতেই শেষ হবে সরকারি চাকরির বয়স। সর্বোপরি শিক্ষকদের অবহেলায় শিক্ষার্থীদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চারুকলা বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, `যেখানে অনার্স শেষ হতে সময় লাগার কথা চার বছর, সেখানে আমাদের অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা হয় ২০১৭ সালের একদম শেষে। আর ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালের মার্চে। সে বছরের এপ্রিল থেকে মাস্টার্স শুরু করি, যেটা শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ তে যা এখনো চলছে। আর এখন করোনার দোহাই দেয়।’
দীর্ঘ সেশনজট ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কারণ কি? ‘ জানতে কথা হয় বিভাগটির প্রধান ড. মুহাম্মদ এমদাদুর রাশেদ সুখনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বিভাগের তুলনায় চারুকলার পরীক্ষা আর ক্লাসের প্রক্রিয়াগুলি ভিন্ন। আর এটি কিছুটা সময়সাপেক্ষ। এ কারণে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি কীভাবে এ সমস্যা দূর করা যায়।’
সেশনজটের বিরুদ্ধে কথা বললে ইয়ার ড্রপ দেওয়া হয় এই অভিযোগকে অস্বীকার করে সুখন বলেন, ‘এই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। দু-একজন ড্রপ হলে তাঁদের নিজেদের একাডেমিক কারণে হয়।’
উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, `আসুন প্রথমে কোভিড-১৯ এর অভিশাপ কাটিয়ে উঠি, তারপর আমরা নতুন করে শুরু করব এবং আশা করি যে কোন বিভাগের সাথে থাকা এই সমস্যাটি কাটিয়ে উঠব।’