কোচিং বাণিজ্য বন্ধের জন্য সরকারের নীতিমালা বৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কোচিং করাতে পারবেন না।
কোচিং বাণিজ্য বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা পাঁচটি রিটের ওপর বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও রাজিক আল জলিলের দ্বৈত বেঞ্চ।
ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান জানান, যেহেতু কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারের নীতিমালা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে সে কারণে ক্লাসে পাঠদানের বাইরে মাসে ১৭৩ টাকা করে যে অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ার বিধান করা হয়েছে তার বাইরে কোনো কোচিং করানো যাবে না।
কোচিং বাণিজ্যের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে তদন্ত করেছিল সে বিষয়ে হাইকোর্ট বলেন, সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে দুদক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ এখতিয়ার বহির্ভূত।
এ সময় আদালত আরো বলেন, কোনো অপরাধ তদন্ত করার ব্যাপারে দুদককে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
গত ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট আরেকটি রায়ে বলেন, ক্লাস রুমে শিক্ষকদের পড়ানোর ব্যর্থতার কারণেই কোচিং বাণিজ্য হচ্ছে। কোচিং বাণিজ্য নতুন ধরনের অপরাধ।
এর আগে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- সেজন্য সরকার গত বছর কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। দুদকের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ওই নোটিশ দেওয়া হয়।
পরে ওইসব নোটিশ ও শিক্ষাতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধের নীতিমালা-২০১২ নিয়ে শিক্ষকরা হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। আদালত গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই চিঠির কার্যকারিতা চার মাসের জন্য স্থগিত করার পাশাপাশি রুল জারি করেন।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করার অনুমতি চেয়ে লিভ টু আপিল করে। গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আপিল বিভাগ একই বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চকে এ রুলের নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
পরে আদালত এ রুল নিষ্পত্তির জন্য সাবেক দুই অ্যাটর্নি জেনারেল হাসান আরিফ ও ফিদা এম কামালকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন। পরে গত ২৭ জানুয়ারি চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।